আইসিটি মামলায় পলাতক, কাউন্সিলরদের অনাস্থা
সরিষাবাড়ী পৌর মেয়র রোকন বরখাস্ত

Published: 18 October 2020

বিশেষ সংবাদদাতা, ঢাকা : জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকনকে মেয়র পদ বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

রবিবার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব (পৌর-২ শাখা) ফারজানা মান্নান স্বাক্ষরিত এসংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়। আইসিটি মামলায় পলাতক, কাউন্সিলরদের অনাস্থা, আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার ও কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে রোকুনুজ্জামান রোকনকে বরখাস্তের এ সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, যেহেতু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মেয়র রোকনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট গৃহিত ও ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে এবং তিনি দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পৌরবাসী সেবাবঞ্চিত হচ্ছে, যা পৌরসভার স্বার্থপরিপন্থী ও প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমীচিন নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে। বিধায় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ৩১ (১) ধারা অনুযায়ী প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরিপত্রের অনুলিপি মেয়র রোকনসহ ৯টি দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, মেয়র রোকনের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারি, অর্থ আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্য, অস্ত্রের মহড়া, টেন্ডারবাজি, গুম নাটক, হত্যার হুমকিসহ শতাধিক অভিযোগে গত ১ মে কাউন্সিলররা মেয়র রোকনকে অনাস্থা ও একই দিন বিকেলে আওয়ামী লীগ পৌর কমিটির সহসভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করে। এতে তিনি পৌরসভায় অবাঞ্ছিত হয়ে পড়লে ১৫ মে রাতে কলেজ মাঠে নির্মিতব্য মুক্তমঞ্চ ও ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে রোকন এলাকা ছেড়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী আলহাজ ডা. মো. মুরাদ হাসান এমপিকে জড়িয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য শুরু করেন। এরপর ৫ জুলাই তার বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতা সামিউল হক খান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। দুটি মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে ১৫ মে থেকে রোকন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এরপর কর্মচারীরা বকেয়া বেতন পরিশোধ ও মেয়রকে বরখাস্তের দাবিতে পৌরসভা কার্যালয়ে ৬ সেপ্টেম্বর তালা ঝুলিয়ে দেয়। টানা একমাস আন্দোলনের মাথায় কর্তৃপক্ষ তাকে বরখাস্ত করল।

পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী জানান, রবিবার বিকেলে মেয়র রোকনের বরখাস্তের পত্রটি হাতে পেয়েছি। তার বরখাস্তের মধ্য দিয়ে পৌরসভায় নতুন করে গতি ফিরে আসবে বলেও তিনি জানান।

পলাতক মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকনের বক্তব্য জানতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় নেওয়া সম্ভব হয়নি।