বাবা হত্যা করলেন পুত্রকে!
বিশেষ সংবাদদাতা : নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় বাবার ছোড়া ইটে মাদকসেবী এক ছেলের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ছেলের নাম মো. সনু।
শনিবার গভীর রাতে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের গোলাহাট পুলিশ ফাঁড়িসংলগ্ন রেলকলোনির বস্তিতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের বাবার নাম মো. ভলু (৬০)। তিনি শহরের গোলাহাট রেলকলোনি বস্তিতে বসবাস করেন। তিনি পেশায় রিকশাচালক।
বাবা ভলুর অভিযোগ, গত এক মাস আগে তার মাদকসেবী ছেলে মা-বাবাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। সেই থেকে তিনি স্ত্রী সাম্মাসহ (৫৫) পাশের উত্তরা আবাসন এলাকায় মেয়ের বাড়িতে থাকতেন।
শনিবার সকালে ছেলে ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালক মো. সনুর বাড়িতে বেড়াতে যান তার স্ত্রী সাম্মা। সেখানে ছেলের বউয়ের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ছেলে তার মাকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
এ খবর রাতে জানতে পারেন বৃদ্ধ ভলু। তিনি স্ত্রীর অপমানের প্রতিশোধ নিতে ছেলের ওপর ইট ছুড়ে হামলা চালান। এতে ঘটনাস্থলেই ছেলে মারা যায়।
জানতে চাইলে নিহত সনুর মা সাম্মা বলেন, মাদকাসক্ত ছেলেকে তার বাবাই মেরেছে। তবে তিনি শাসন করতে চেয়েছিলেন, হত্যা করতে চাননি।
পুলিশের কাছে গ্রেফতার ভলু হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। রাতেই সনুর স্ত্রী সাজদা শ্বশুরকে আসামি করে সৈয়দপুর থানায় মামলা করেন।
আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, সকালে আমার শাশুড়ি হুমকি দিয়েছিলেন, তোর স্বামীকে আজ হত্যা করা হবে। এটা যে সত্যি ঘটবে তা তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি। জানলে তিনি বাবার বাড়িতে যেতেন না বলে জানান। ঘটনার সময় সনুর স্ত্রী বাবার বাড়ি সৈয়দপুর শহরের সুরকিমিল মহল্লায় অবস্থান করছিলেন।
সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল জানান, ঘটনাটি মর্মান্তিক, এটি সামাজিক অবক্ষয়। মাদকব্যাধি এ জন্য দায়ী। বিষয়টির নেপথ্যে কী আছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সৈয়দপুর থানার ওসি আবুল হাসনাত খান জানান, সনুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। নিহত সনুর বাবা ভলুকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তবে অসুস্থবোধ করলে তাকে স্থানীয় ১০০ শয্যা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।