৭৩ বছরের রওশন এমবিএতে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট
বিশেষ সংবাদদাতা : পাবনায় ৭৩ বছরের এক বৃদ্ধ এমবিএর চূড়ান্ত পরীক্ষায় ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়ার কীর্তি গড়েছেন। তার নাম রওশন আলী।
তিনি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ ডিগ্রি নেন।
রওশন আলী পেশায় একজন স্কুলশিক্ষক। অবসরে গেছেন ২০০৮ সালে। এরও এক যুগ পর পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি হন তিনি। ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি সিজিপিএ ৩.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ওই ব্যাচে তিনিই প্রথম হয়েছেন।
রওশন আলী পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের বান্নাইপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। সুজানগর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় (এখন সরকারি) থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি এবং পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। সাংসারিক কারণেই তখন আর পড়ালেখা করা হয়নি তার। তবে পড়ালেখার অদম্য ইচ্ছা ছিল তার।
জীবিকার তাগিদে সুজানগরে শহীদ দুলাল পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ১৯৭২ সালে সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দেন। শিক্ষকতা শুরুর কয়েক বছর পর সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন রওশন। এর পর ইচ্ছা থাকার পরও কর্মজীবনের ব্যস্ততা আর সমস্যায় পড়াশোনা করা হয়ে ওঠেনি। তিনি ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে শিক্ষকতা থেকে অবসরে যান।
কিন্তু মাস্টার্স করতে না পারার একটা আক্ষেপ তার মধ্যে কাজ করছিল। পরে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে এমবিএ সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি হন। সম্প্রতি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। তিনি সিজিপিএ ৩.৫০ পেয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছেন।
রওশন আলীর দুই ছেলে রয়েছেন। বড় ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে পাবনার একটি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। আর ছোট ছেলে চিকিৎসা পেশায় রয়েছেন।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন আমিরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, এ বয়সে এসেও রওশনের মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করাটা একটা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।