`ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে ভাই-ভাবিসহ চারজনকে হত্যা

Published: 24 November 2020

বিশেষ সংবাদদাতা, ঢাকা : ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে নিজের ভাই, ভাবিসহ পরিবারের চারজনকে হত্যায় প্ররোচিত হন মোহাম্মদ রাহানুল। এরপর কোমল পানীয় স্পিডের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ধারালো চাপাতি দিয়ে ‘ঘুমন্ত অবস্থায়’ তাদেরকে হত্যা করেন।

এই ঘটনার ৩৫ দিনের মাথায় রবিবার (২২ নভেম্বর) আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।

মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা জেলা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, সিআইডি কর্মকর্তা মুক্তা ধর ও সিআইডির সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া ) জিসানুল হক জিসান।

নিহতরা হলেন- রাহানুলের ভাই শাহিনুর রহমান, শাহিনুরের স্ত্রী সাবিনা, কন্যা তাছনিম ও পুত্র সিয়াম।

সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, গ্রেফতারকৃত রাহানুল দীর্ঘদিন ফেনসিডিলের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ (ডিসোপেন-২) সেবন করতো। এক সময় ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এবং জেলও খাটে। এরপর স্ত্রী ফাহিমার সঙ্গে তার ডিভোর্স হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রায়হানুল বেকার অবস্থায় ভাই ও ভাবির সংসারে থাকতে শুরু করে। ভাবি সাবিনা খাতুন মাঝে মধ্যে টাকার জন্য খারাপ আচরণ করত। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ও বেকার জীবনে ভাবির দুর্ব্যবহারের কারণে এক সময় ভাই-ভাবিসহ পুরো পরিবারের সদস্যদেরই হত্যার পরিকল্পনা করে রাহানুর।

অতিরিক্ত ডিআইজি আরও বলেন, হত্যা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্থানীয় আবু জাফরের দোকান থেকে দুটি স্পিড (কোমল পানীয়) কিনে তার মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। ঘুমের ওষুধ মেশানো এ পানীয় সে তার ভাই, ভাবি, ভাতিজি ও ভাতিজাকে খেতে দেয়। তারা ঘুমিয়ে পড়লে গত ১৫ অক্টোবর রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে প্রথমে ভাই এবং পরবর্তীতে ভাবিসহ ভাতিজি ও ভাতিজাকে হত্যা করে রাহানুর।

সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর রাহানুর হত্যার আলামত মুছে ফেলার চেষ্টা করে। কিন্তু তার আগেই সিআইডি তাকে গ্রেফতার করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতিসহ রক্ত মাখা কাপড়।

ঘাতক রাহানুর নিয়মিত ফেনসিডিল সেবনের কথা সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। মাত্র এক মাস ৫ দিনের মাথায় গত রবিবার সিআইডি আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করে।