রাজধানীতে ধর্ষণের পর স্কুল ছাত্রী হত্যা : উত্তপ্ত কলাবাগান

Published: 8 January 2021

পোস্ট ডেস্ক : রাজধানীর কলাবাগানে ধর্ষণের পর স্কুল ছাত্রীকে হত্যার ঘটনায় ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।


রাজধানীর কলাবাগানে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলছাত্রী আনুশকাহকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় গ্রেফতার তানভীর ইফতেফার দিহানকে কলাবাগান থানা থেকে আদালতে নেয়া হয়েছে। তাকে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে কলাবাগান থানায় আনুশকাহর বাবার করা মামলায় শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে দিহানকে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নিয়েছে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানান ওসি (তদন্ত) আসাদুজ্জামান তার ১০ দিনের রিমান্ড দাবি করেছেন। আদালত এ বিষয়ে এখনও আদেশ দেননি। টেলিফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলাবাগান থানার টেলিফোন অপারেটর আনোয়ার হোসেন।

নিউমার্কেট অঞ্চল পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান শুক্রবার জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়ার চেষ্টা করা হবে। আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলে পুলিশ আদালতের কাছে ১০ দিনের রিমান্ড চাইবে।

স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় আটক বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। মেয়েটির লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

ধর্ষণের শিকার কিশোরীর নাম আনুশকাহ নূর আমিন (১৮)। সে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল মাস্টার মাইন্ডের ‘ও লেভেল’-এর ছাত্রী। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলাবাগানের ডলফিন গলিতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মেয়েটির বন্ধু দিহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও তিন বন্ধুকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল হাসান যুগান্তরকে বলেন, মেয়েটির শরীরের ওপরের দিকে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাইনি। তার বন্ধু দিহান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, সে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছে। তবে তার দাবি, মেয়েটির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি।

নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, আনুশকাহর বাসা ধানমণ্ডির সোবহানবাগে। বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার কথা বলে দুপুর ১২টার দিকে বাসা থেকে বের হয়। পরে ডলফিন গলিতে এক বন্ধুর বাসায় যায়। সেখানে ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বন্ধু অন্য তিন বন্ধুকে ফোন করে আনে।

পরে তারা শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ছাত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই ছাত্রীর এক আত্মীয় বলেন, ওই বন্ধুর বাসায় গেলে ধর্ষণের ফলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এ কারণে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে রাজধানীর কলাবাগানে স্কুলছাত্রী আনুশকার মৃত্যুর ঘটনায় ধর্ষণ হয়েছে কিনা তা ফরেকসিক প্রতিবেদনের পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ডিএমপি রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান। দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচাতে ক্রাইম রিপোটার্স ইউনিটির বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে অতিরঞ্জিত তথ্য প্রকাশ না করারও আহবান জানান ডিসি রমনা।
নিহত স্কুলছাত্রীর বাবা এ ঘটনাকে ধর্ষণ হিসেবে এজাহারে দাবি করলেও পুলিশের বলছে তদন্তের পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।