লন্ডন হাই কমিশনে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিশু-কিশোদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মদিবস উদযাপন

Published: 18 March 2021

পোস্ট ডেস্ক : বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশুদিবস ‘চিরন্তন মুজিব’ শীর্ষক এক বিশেষ স্মারক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করেছে।

বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী থেকে শিশু-কিশোরদের পাঠ, ‘বঙ্গবন্ধু ও ব্রিটেন’ বিষয়ে তিন শতাধিক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিশু-কিশোরের চিত্রাংকন ও ‘জাতির পিতা’ শীর্ষক বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গীকৃত শিশু-কিশোরদের এক বিশেষ সংগীত পরিবেশনা ছিলো দিবস উদযাপনের মূল আকর্ষণ।

দিবসটির স্মরণে যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিল্পী আসাদ উল্লাহ’র আঁকা বঙ্গবন্ধুর একটি পূর্ণ প্রতিকৃতি উন্মোচন করেন এবং মিশনের সিনিয়র কূটনীতিকদের নিয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে এই প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে কূটনীতিক, যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক ও কমনওয়েলথ অফিসের প্রতিনিধি, ব্রিটিশ শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিক এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যসহ অনেক শিশু-কিশোর স্বতস্ফূর্তভাবে যোগ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, এমপি, বলেন ‘‘বঙ্গবন্ধু সব সময় শিশুদের সর্বোত্তম ভবিষ্যত সুনিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন এবং আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি শিশু যাতে সুন্দর ও সম্পূর্ণরুপে বেড়ে উঠতে পারে সে জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।”

হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন, যাতে দেশ ও বিদেশে প্রতিটি বাংলাদেশি শিশু-কিশোর বঙ্গবন্ধুর প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধের আদর্শ সম্পর্কে জানতে ও উজ্জীবিত হতে পারে।”

বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর সভাপতি লাকি ইনাম শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধু সুগভীর ভালোবাসা, সুদুরপ্রসারি স্বপ্ন এবং তা বাস্তবায়নে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিলো তার উল্লেখ করে শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য সেসব বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

কোভিড-পরবর্তী সময়ে আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি’র প্রথম বিদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার মিস গায়ত্রি ইসার কাওর বলেন, এই সফর বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা বার্ষিকীকে ভারত যে অপরিসীম গুরুত্ব ও মর্যাদা দিচ্ছে তারই স্বাক্ষর বহন করে। তিনি প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা‘র নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের অকুন্ঠ প্রশংসা করেন।

বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক ও কমনওয়েলথ অফিসের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক মিসেস লিসা বান্দারি বলেন, “গণতান্ত্রিক, স্বাধীন, ধর্মনিরপেক্ষ ও অন্তর্ভূক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার যে ভিত্তি শেখ মুজিব গড়ে দিয়ে গেছেন, তা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন এবং পরবর্তী সময়েও অশেষ অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।”

হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলাম লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক এশিয়ান এ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিনের সম্পাদক ডানকান বার্টলেট, বিশিষ্ট বিবিসি সাংবাদিক আশিস রায়, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আন্দোলনের সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শম্পা রেজা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রখ্যাত কবি নির্মলেন্দু গুণের লেখা একটি কবিতা আবৃত্তি করেন এবং বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ফাহমিদা নবী বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি গান শুনান।

হাইকমিশনার দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের নিয়ে জাতির পিতার জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে “১০১” লেখা একটি কেক কাটেন। এর আগে সকালে দিবসের শুরুতে হাই কমিশনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার পর জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রদত্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর শহীদ পরিবারের সদস্যদের আত্বার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।