নিখোঁজের নয় দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর গলাকাটা লাশ মিলল মর্গে
বিশেষ সংবাদদাতা :
নয় দিন নিখোঁজের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাফিজের গলাকাটা লাশের খোঁজ মিলেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় হাফিজের পরিবারের সদস্যরা শাহবাগ থানায় ওসির সঙ্গে দেখা করতে গেলে তার পরিচয় শনাক্ত হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, `গত ১৫ মে শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের গেইটের সামনে হাফিজ দৌড়াদৌড়ি করছিলো আর বলছিলো ‘আমাকে মাফ করে দাও’। একপর্যায়ে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনের এক ভ্রাম্যমাণ ডাব বিক্রেতার ধারালো দা দিয়ে নিজের গলা নিজেই কেটে ফেলেন। পরে গলাকাটা অবস্থায় দৌড় দিয়ে মেডিকেলের বহির্বিভাগের গেইটের সামনে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তিনি মারা যান। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় তাকে নয়দিন ধরে হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছিলো। রবিবার হাফিজের পরিবারের সদস্যরা শাহবাগ থানায় গেলে ওসির মোবাইলে সংরক্ষিত ছবি পরিবারকে দেখালে তারা লাশ শনাক্ত করেন।’
হাফিজুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। একইসঙ্গে ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। হাফিজুরের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানায়।
বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, `গত ১৫ মে ঈদুল ফিতরের পরদিন দুপরে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসে হাফিজুর। বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হল এলাকায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা শেষে রাত ৮-৯ টার দিকে তার নিজ বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে যাওয়ার জন্য বিদায় নেয়। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। এই ঘটনায় তার মা সামছুন নাহার গত শুক্রবার কসবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। গত নয় দিন ধরে তার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব খোজাখুজি করছিলো।
এই বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশীদ বলেন, `গত ১৫ মে শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের গেইটের সামনে এক ডাব বিক্রেতার ধারালো দা দিয়ে হাফিজ নিজের গলা কেটেছেন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তিনি মারা যান। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় তাকে নয়দিন ধরে হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছিলো। এখন পরিবার যেভাবে চায়, আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’