বসনিয়ার কসাই কারাদজিচ ব্রিটেনে

Published: 29 May 2021

পোস্ট ডেস্ক :


বসনিয়ার কসাইখ্যাত রাদকো কারাদজিচকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নেদারল্যান্ড থেকে বুধবার উড়িয়ে আনা হয়েছে ব্রিটেনে। সেখানে আইলে অব উয়াইট কারাগারে রাখা হয়েছে। সেখানেই তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বাকিটা ভোগ করবে। কিন্তু ব্রিটেনের এই দ্বীপে অবস্থিত কারাগারকে অস্বাস্থ্যকর ও ‘আনসিভিলাইজড’ বলে অভিযোগ করেছে তার মেয়ে সোনজা কারাদজিচ জোভিসেভিচ। সে দাবি তুলেছে, ওই দ্বীপে তার পিতার কারাবাস অগ্রহণযোগ্য। উল্লেখ্য, মুসলিমদের ওপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধের দায়ে কারাদজিচকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ২০১৬ সালে অভিযুক্ত করে সাজা দেয়। ব্রিটেনে আনার পর তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছে মেয়ে সোনজা কারাদজিচ জোভিসেভিচ। কারদজিচকে ব্রিটেনে এমইচএমপি আইলে অব উয়াইট কারাগারে রাখা হয়েছে।
এর আগে এই কারাগার পার্কহার্স্ট নামে বেশি পরিচিত ছিল। এই কারাগার নিয়ে বসনিয়ার বার্তা সংস্থা এসআরএনএ’কে সোনজা কারাদজিচ জোভিসেভিচ বলেছে, যেখানে তাকে (কারাদজিচ) রাখা হয়েছে তার অবস্থা একেবারে নাজুক। গ্রহণযোগ্য নয়। তাকে রাখা হয়েছে যে ভবনে তা ক্যান্সার সৃষ্টির মতো অ্যাসবেস্টোসে পূর্ণ, যা সারা বিশ্বে নিষিদ্ধ। এতে পরিষ্কার হয় যে তাকে কোথায় রাখা হয়েছে। তিনি জীবনের বাকি সময় ব্রিটেনে কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমার পিতাকে অত্যন্ত আনসিভিলাইজড পরিস্থিতিতে রাখা হয়েছে। তাকে দক্ষিণ লন্ডনে রাখা হয়েছে। এতে পরিবারের আশঙ্কা তাকে ইচ্ছা করে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। এটা নিরাপত্তা পরিষদে জাতিসংঘের রেজ্যুলুশনের বাইরে করা হচ্ছে। এর ফলে আমাদের জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করা শারীরিকভাবে, আর্থিকভাবে এবং প্রক্রিয়াগত দিক দিয়ে খুব কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ, করোনা মহামারির মধ্যে ভিসায় কঠোরতা আনা হয়েছে। ফলে আমরা সেখানে গিয়ে তার সাক্ষাত নিতে খুব দুর্ভোগে পড়বো। তবে তার এসব অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করেছেন ব্রিটিশ আইন মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র। তিনি বলেছেন, ব্রিটেনের জেলগুলো স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার মানদ- অনুসরণ করে চলে। গত ১২ই মে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব ঘোষণা দেন যে, আন্তর্জাতিক চুক্তির অধীনে কারাদজিচকে গ্রহণ করবে ব্রিটেন।
৭৫ বছর বয়সী এই যুদ্ধাপরাধীকে প্যারোলবিহিন যাবজ্জীবন জেল দিয়েছে আদালত। এর অর্থ মৃত্যুর আগে সে জেল থেকে মুক্তি পাবে না। তার আইনজীবী গোরান পেট্রোনিজেভিচ বলেছেন, কারাদজিচ লন্ডনে পৌঁছার পর বুধবার তার সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য কথা বলেছেন তিনি। বলেছেন, তার মক্কেল স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে ভাল নেই। তিনি ওষুধ খাচ্ছেন। উল্লেখ্য, মনোবিজ্ঞানী থেকে রাজনীতিকে পরিণত হওয়া কারাদজিচ ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ নৃশংসতা চালায়। এর মধ্যে সে সেব্রেনিৎসার কমপক্ষে ৮ হাজার মুসলিম পুরুষকে হত্যার জন্য দায়ী।