প্রবাসী আয়ে বড় ধরনের ধাক্কা, তিন মাস কমছে রেমিট্যান্স

Published: 3 October 2021

পোস্ট ডেস্ক :


চলমান করোনা মহামারির মধ্যে দেড় বছর ধরে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ে উল্লম্ফন ভালোই ছিল। সংকটেও প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতন ঘটেছে। প্রবাসী আয়ের ধারায় বড় ধরনের ধাক্কা লাগায় পর পর তিন মাস কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। গত সেপ্টেম্বর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাসী আয় কমেছে ১৯.৭৫ শতাংশ। আগামী দিনে তা আরও কমতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যাংকাররা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় এসেছে ১৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলার। আর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আয় এসেছিল ২১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, মহামারি শুরুর পর বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অবৈধ পথে আয় আসাও বন্ধ হয়। এ কারণে সব আয় ব্যাংকিং চ্যানেলে আসতে শুরু করে। এতে প্রবাসী আয়ে নতুন নতুন রেকর্ড হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়। এখন যোগাযোগব্যবস্থা চালু হয়ে গেছে। আয়ও কমতে শুরু করেছে। করোনায় প্রবাসীরা যে ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তা এখন বোঝা যাবে। আবার জনশক্তি রপ্তানির চিত্রও সুবিধাজনক নয়। জানা গেছে, গত আগস্ট মাসে প্রবাসীরা ১৮১ কোটি ডলারের আয় পাঠান। আর গত বছরের আগস্টে এসেছিল ১৯৬ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। সেই হিসাবে আগের বছরের চেয়ে গত আগস্টে প্রবাসী আয় প্রায় ৮ শতাংশ কমেছিল। এ ছাড়া চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় সোয়া ৩ শতাংশ। জুলাইয়ে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৮৭ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ১৯৪ কোটি ডলার পাঠান প্রবাসীরা, যা দেশের সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো। ব্যাংকাররা বলছেন, করোনার মধ্যে সবার আয় কমলেও দেশে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা বেড়েছিল, যার বড় একটি অংশ আগে মূলত অবৈধ পথে আসত। বিমান যোগাযোগ ও অবৈধ পথ বন্ধ থাকার ফলে সব আয় ব্যাংকিং চ্যানেলে এসেছে। এখন যোগাযোগ শুরু হওয়ায় বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা কমে গেছে। আগামী দিনে যা আরও কমে যেতে পারে। বর্তমানে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এলে অতিরিক্ত ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয় সরকার। বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে সব মিলিয়ে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২ লাখ কোটি টাকার বেশি। এই আয় ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১ হাজার ৮০৩ কোটি ডলারের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি।