মার্কিন মধ্যবর্তী নির্বাচন: রিপাবলিকান জোয়ার ওঠেনি যে কারণে

Published: 10 November 2022

পোস্ট ডেস্ক :


যুক্তরাষ্ট্রে ৮ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি এবং ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জনপ্রিয়তার পড়তি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রিপাবলিকান দল আশা করেছিল, এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে একচেটিয়াভাবে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ নেবে তারা। কিন্তু কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে জিততে চললেও সে রকম ঢালাও বিজয় তারা পায়নি। বিবিসির একটি বিশ্লেষণে রিপাবলিকানদের প্রত্যাশিত ‘লাল ঢেউ’ না আসার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।

নির্বাচন শুধু অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর ছিল না : ফল প্রকাশের পর চলতি মূল্যস্ফীতি তথা অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে ডেমোক্র্যাট ভোটবাক্সে সম্ভাব্য বিপর্যয়ের আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত হয়নি।

বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইপসোসের উপাত্ত বিশ্লেষণকারী ক্রিস জ্যাকসন বলেন, ‘মানুষ অর্থনীতি নিয়ে খুশি নয়। তবে তারা কাজ হারায়নি। রিপাবলিকানরা, বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুসারীরা নির্বাচনে নিজেদের পথ তৈরি করতে পারেননি। মুদ্রাস্ফীতি কিংবা অর্থনৈতিক ইস্যুকে আলোচনায় সামনে তুলে আনতে পারেননি তাঁরা। ’
ডেমোক্র্যাটদের শক্ত ভিত : তথ্য-উপাত্তে দেখা গিয়েছিল, এবার যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অংশে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ। সেসব জায়গায় নারীর গর্ভপাতের অধিকারের মতো ইস্যুগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে তরুণ ভোটাররা ডেমোক্র্যাট শিবিরকে শক্ত ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছেন। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক জন টেইলর বলেন, ‘জেনারেশন জেড (১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী) ভোটাররা আসলেই পরিণত হয়েছেন। ’

গত মঙ্গলবার ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে ভোট দিতে বের হওয়া ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থী জ্যাক প্রিবল নিজেকে সমকামী পরিচয় দিয়ে বলেন, গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করা অন্যান্য অধিকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।

প্রেসিডেন্টের দলের হারের ধারা উল্টে গেছে : ঐতিহাসিকভাবে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের দল প্রায় সব সময়ই হেরে থাকে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্টা বারবারা কর্তৃক প্রকাশিত উপাত্তে দেখা যায়, ১৯৩৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাসীন সব প্রেসিডেন্টের দল মধ্যবর্তী নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদে গড়ে ২৮টি আসন এবং সিনেটে চারটি আসন হারিয়েছে।

এবার ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেনের ক্ষেত্রে ওই প্রথার কিছুটা ব্যতিক্রম ঘটল। ওহাইও অঙ্গরাজ্যের কেজ ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক জাস্টিন বুচলার বলেন, ভোটাররা পরিসংখ্যানের চেয়ে নিজেদের পরিপক্বতাকে এবার এগিয়ে রেখেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘গণভোট’ : রিপাবলিকান পার্টিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাব কেমন, এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনকে অনেকটা তার পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের অধ্যাপক জন টেইলর বলেন, অনেকে ভোট দিয়েছেন রিপাবলিকান পার্টিতে ট্রাম্পের প্রভাব হ্রাস করার লক্ষ্যে। এই অধ্যাপকের মূল্যায়নের সঙ্গে মিলে যায় জর্জিয়ার ৩১ বছর বয়সী ভোটার অ্যালেক্স হেইডির কথা। ট্রাম্পকে নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ডেমোক্র্যাটদের সব কথার সঙ্গে একমত নই। কিন্তু আমি মনে করি, তারা রিপাবলিকানদের চেয়ে বেশি স্থিতিশীল। ’ সূত্র : বিবিসি