মিয়ানমারে প্রতিরোধ বাহিনীর হামলায় ১০ জান্তা সেনা নিহত

Published: 7 April 2023

পোস্ট ডেস্ক :


মিয়ানমারে সাগাইং অঞ্চলে সরকারি বাহিনী ও প্রতিরোধ বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিরোধ বাহিনীর হামলায় ১০ জান্তা সেনা নিহত হয়েছেন। শুক্রবার বার্মা নিউজ ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে।

চলতি সপ্তাহে সাগাইং প্রদেশের কালাই টাউনশিপের তুইঙ্গো গ্রামের কাছে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জান্তা সেনার একটি দল ওই এলাকায় টহল দিচ্ছিল। সে সময় তাদের ওপর হামলা চালায় বিদ্রোহী যোদ্ধারা। জান্তা সেনারাও পাল্টা হামলা চালায়। তবে তাতে প্রতিরোধ বাহিনীর কেউ হতাহত হয়নি।

এদিকে মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় কারেন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে দেশটির বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে ভয়াবহ সংঘাত শুরু হয়েছে। এতে ওই অঞ্চলের হাজার হাজার বাসিন্দা প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডে পালিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার থাইল্যান্ডের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ লড়াইয়ের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে গেছেন। থাইল্যান্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় কারেন প্রদেশের মায়াবতী শহরের আশপাশের অঞ্চলকে কেন্দ্র করে বর্তমানে তুমুল সংঘর্ষ চলছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে। ফলে নতুন করে হাজার হাজার মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। থাইল্যান্ডের তাক প্রদেশের কর্মকর্তারা বলেছেন, ১০টি এলাকাজুড়ে প্রায় ৩ হাজার ৯৯৮ জন লোক থাইল্যান্ডে অস্থায়ী আশ্রয়ে পালিয়ে এসেছে। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

থাইল্যান্ডের ইংরেজি সংবাদপত্র খাওসোদ ও বিবিসি বার্মিজ জানিয়েছে, জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির সশস্ত্র যোদ্ধারা মিয়ানমারের একটি সীমান্তরক্ষী চৌকিতে হামলার পর উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দাতব্য কর্মী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে অনেক মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করছে এবং কেউ কেউ সীমান্তের মিয়ানমার অংশে অপেক্ষা করছে। আশ্রয়ের খোঁজে থাকা এসব মানুষের কাছে পর্যাপ্ত পানীয় জল নেই বলে তিনি জানান।

ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (কেএনএলএ) মতো কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী কয়েক দশক ধরে সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর থেকে জেনারেলদের ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করার জন্য অভ্যুত্থানবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে তারাও যোগ দেয়।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ব্যাপক অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে অন্তত সাড়ে ৭ লাখ উদ্বাস্তু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকে। এ পর্যন্ত দেশটির ৩৪টি আশ্রয় শিবিরে সবমিলিয়ে অন্তত ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে রোহিঙ্গারা প্রায়ই ছোট ছোট নৌকায় করে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এতে নৌকাডুবিতে অনেকের মৃত্যুও হচ্ছে।