ব্রিটেনে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্মঘটে অচল স্বাস্থ্যসেবা
পোস্ট ডেস্ক :

যুক্তরাজ্যের হাসপাতাল কর্তারা রাতারাতি রোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। কারণ দেশের জুনিয়র ডাক্তাররা মঙ্গলবার থেকে চার দিনের ধর্মঘটে নেমেছেন। জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, বেতন বাড়াতে হবে। কারণ, মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ বেড়েছে। এদিকে, ব্রিটেনে মোট চিকিৎসকের অর্ধেকই জুনিয়র চিকিৎসকের শ্রেণিতে পড়েন। এর মাঝেই ইস্টার এবং রমজান পড়ায় চিকিৎসকদের দেখা মেলাই ভার। ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ( NHS ) ইতিহাসে এরকম ধর্মঘট আগে কখনও হয়নি। কয়েক বছর আগেও ব্রিটেনে চিকিৎসকদের ধর্মঘট খুবই বিরল ঘটনা ছিল। তখন চিকিৎসক কম থাকার জেরে অনেক সময় রোগীদের ভুগতে হত। ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ডিরেক্টর স্টিফেন পাওইস বলেছেন, ‘এই ধর্মঘটে প্রভাব পড়েছে চিকিৎসা পরিষেবায়।আমরা চিন্তায় পড়েছি।’
হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছেড়ে চিকিৎসকরা ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায় চিকিৎসা পরিষেবা পুরো বিপর্যস্ত। স্বাস্থ্য কর্তারা মনে করছেন শনিবার সকাল ৭ টায় যখন এই ধর্মঘট উঠবে ততদিনে NHS পরিষেবাগুলি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। এনএইচএস প্রোভাইডারদের প্রধান মরিয়ম ডেকিন বলেছেন – অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে রাতে ডিউটি করার মতো চিকিৎসক পাওয়া যাচ্ছে না। ডিকিন যোগ করেছেন, জিপি, প্যারামেডিকস এবং ফার্মাসিস্ট সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য পেশাদাররা হাসপাতালগুলিতে রোগীদের পরিষেবা পৌঁছে দেবার চেষ্টা করছেন । এনএইচএস কনফেডারেশনের প্রধান নির্বাহী ম্যাথিউ টেলর বলেছেন যে জুনিয়র ডাক্তারদের পদক্ষেপের জেরে ইংল্যান্ডের এনএইচএস পরিষেবা এই সপ্তাহে ঝড়ের মুখে পড়েছে ।
জুনিয়র চিকিৎসকদের ইউনিয়ন ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বলা হয়েছে, ৩৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি চান তারা। এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিভ বার্কলে জানিয়েছেন, ইউনিয়নের এই দাবি অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দিয়েছেন । অথচ এই চিকিৎসকরাই ফ্রন্টলাইন কর্মী হিসেবে কাজ করেন। এনএইচএস প্রধানরা অনুমান করেছেন যে হাসপাতালগুলিকে এই সপ্তাহে রোগীদের আড়াই লক্ষ থেকে সাড়ে তিন লক্ষ অ্যাপয়েন্টমেন্ট এবং অপারেশন বাতিল করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের মুখপাত্র বলেছেন যে “আমরা BMA জুনিয়র ডাক্তারদের তাদের ধর্মঘট বন্ধ করার জন্য এবং আলোচনার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। “তবে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবির সাথে তারাও একমত নন। এদিকে চিকিৎসকরাও নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন। সবমিলিয়ে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা এক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।