বিশ্বে ৩৩ কোটি শিশু দারিদ্র্যসীমার নিচে

Published: 14 September 2023

পোস্ট ডেস্ক :


বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি মানুষকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে করোনা মহামারি; শিশুরাও বাদ যায়নি এ থেকে। এই মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে ৩৩ কোটি ৩০ লাখ শিশু। অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতিদিন মাত্র ২৩৫ টাকার (২ দশমিক ১৫ ডলার) মধ্যে খাদ্য, বস্ত্র ও অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে হয় তাদের। আনুপাতিক হিসেবে এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রতি ছয় জন শিশুর এক জন চরম দারিদ্র্যের শিকার।

বুধবার জাতিসংঘের শিশু অধিকার ও নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মহামারিপূর্ব সময়ের তুলনায় বর্তমানে বিশ্বে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী শিশুদের সংখ্যা বেড়েছে ৩০ লাখ। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এই প্রতিবেদনের প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে বলেন, করোনা মহামারি, সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক ধাক্কা সব মিলে উদ্ভূত যে সংকট, সেটিই কোটি কোটি শিশুকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম ঋণ ও আর্থিক সহায়তা দানকারী সংস্থা বিশ্বব্যাংক এই পরিস্থিতিকে ‘অসহনীয়’ বলে উল্লেখ করেছে। বিশ্বব্যাংকের বৈশ্বিক দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সমতা বিধান বিভাগের পরিচালক লুইস ফেলিপ লোপেজ কালভা বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্ব জুড়ে ৩৩ কোটি ৩০ লাখ শিশু চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে। তারা কেবল মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণ করতে পারছে না এমন নয়, সম্মান এবং একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশা থেকেও এই শিশুরা বঞ্চিত। এ অবস্থা রীতিমতো অসহনীয়।

ইউনেস্কোর প্রতিবেদন অনুসারে, দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী এই শিশুদের একটি বড় অংশ আফ্রিকার সাব-সাহারান অঞ্চলের। এই অঞ্চলভুক্ত লাইবেরিয়া, নাইজেরিয়া, বুরুন্ডি, বুরকিনা ফাসো, বেনিন, কেনিয়া, উগান্ডা, সুদান— আটটি দেশের মোট শিশুর ৪০ শতাংশই চরম দারিদ্র্যের শিকার।

প্রসঙ্গত, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সব শিশুকে চরম দারিদ্র্য অবস্থা থেকে মুক্তির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল জাতিসংঘ। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সেই লক্ষ্য অধরা থেকে যাবে বলে মনে করছে ইউনিসেফ। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল তার বিবৃতিতে বলেন, আমরা এই শিশুদের এ অবস্থায় ফেলে রাখতে পারি না। অবশ্য এক্ষেত্রে আমাদের চাওয়ার চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো বিভিন্ন দেশের সরকারের সদিচ্ছা। সরকার যদি তার নীতিতে শিশুদের দারিদ্র্যমুক্তকরণের গুরুত্ব বৃদ্ধি করে, একমাত্র সেক্ষেত্রেই এই সংকটের সমাধান সম্ভব।