আর এক মিনিটও এই সরকার থাকবে না: নাহিদ
বিশেষ সংবাদদাতা :
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে।
শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহীদ মিনারে সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আর এক মিনিটও এই সরকার থাকবে না। এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের এক দফা হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং এই সরকারের লুটপাট-দুর্নীতির বিচার। আমরা জেলের তালা ভেঙে আমাদের ভাইদের আনব। যে অভ্যুত্থান শুরু হয়েছে এতে সব জনতা যোগ দিন। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে সম্মিলিত মোর্চা গঠন করব। আমরা আমাদের দেশের রূপরেখা ঘোষণা করব। আগামীকাল থেকে সর্বত্র অসহযোগ আন্দোলন হবে।
তিনি বলেন, আমরা আর তাদের কাছে কী বিচার চাইব? তারাই তো খুনি। আমাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আপনাদের আন্দোলনের কারণে আমরা ছাড়া পেয়েছি। আজকেও গুলি চলেছে। এই পরিস্থিতিতে এক দফা ঘোষণা করছি। শেখ হাসিনা বলেছেন, আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে। তিনি আগেই বুঝেছেন, দরজা রাখার সময় হয়েছে। আমরা আসছি। এই যে খুন-হত্যা হয়েছে, এজন্য তাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে। শুধু শেখ হাসিনা নন, সব মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।
এই সমন্বয়ক বলেন, যদি ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ জারি হয় আমরা মেনে নেব না। এখন ছাত্র-জনতার এগিয়ে আসতে হবে। আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে অসহযোগ আন্দোলন পালন করবেন। সরকার যদি জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, এটা জনগণ মানবে না। আপনারা যদি অস্ত্র চালান তাহলে প্রতিরোধ হবে। আমরা সব গণহত্যার বিচার করব বাংলার মাটিতে।
বাংলাদেশের জনগণ অসহযোগের নেতৃত্ব দেবে জানিয়ে তিনি দেশের সর্বস্তরের মানুষকে ছাত্রদের ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানান।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রিসভার সব সদস্যের পদত্যাগ দাবিতে রোববার (৪ আগস্ট) সারাদেশে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন শুরু হবে বলে সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে দুপুর দেড়টার থেকে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন। ক্ষণে ক্ষণে বাড়তে থাকে সেই জনস্রোত। এক পর্যায়ে শহীদ মিনার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পায়ে হাঁটার পাশপাশি রিকশা, সিএনজিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শহীদ মিনারে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে দেখা গেছে অভিভাবকদেরও। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষক এমনকি রিকশাচালকদেরও এই কর্মসূচিতে দেখা যায়। যেন জনতার ঢল নামে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সমাবেশে যোগ দেওয়া জনমানুষের ভিড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণ থেকে ছড়িয়ে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জগন্নাথ হলসহ অন্যান্য রাস্তায়।