অবিলম্বে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান বিএনপির

Published: 6 August 2024

বিশেষ সংবাদদাতা :


কালবিলম্ব না করে অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে গেছেন। দেশে এখন কোন সরকার নেই। তাই রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে অনুরোধ করবো অবিলম্বে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের। অন্যথায় দেশের রাজনৈতিক শূন্যতা দেখা দিতে পারে।

বেগম খালেদা জিয়া কবে রাজনীতির মাঠে আসবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। তিনি যখন সুস্থতা বোধ করবেন তখনই তিনি রাজনীতির মাঠে আসবেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আমরা অনুরোধ করেছি তিনি যেন দ্রুত দেশে ফিরে আসেন। তিনি বলেছেন, সবকিছু ঠিকঠাক করে চলে আসবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীতা করেছে তারাই এখন ভাঙচুর, আগুন-সন্ত্রাস, লুটপাত করছে। আমি দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানাচ্ছি, যারা এসব ধ্বংসযজ্ঞ করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে পরিস্থিতি শান্ত করবেন। যাতে করে কেউ যেন দেশে নৈরাজ্য তৈরি করতে না পারে।

তিনি বলেন, আমরা শ্রদ্ধা জানাতে চাইতে চাই সেই সব শহীদ ভাইদের যারা দীর্ঘ ১৫-১৬ বছরের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে প্রাণ দিয়েছেন। আমরা অভিনন্দন জানাতে চাই, ছাত্রদের, সন্তানদের। যারা তাদের মেধা, বুদ্ধিমত্তা ও সৎ সাহস নিয়ে দাঁড়িয়ে বুকের রক্ত দিয়ে এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। জনতার বিজয় অর্জিত হয়েছে। আমরা তাদেরকে আবারও অভিনন্দন জানাই।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ছাত্রদের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আমরা আগেই তাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছিলাম, তারা নিশ্চয়ই দলীয় বিষয়টা ভাববেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী বলেন, সংসদ ভেঙে দিয়ে ‘অতি দ্রুত’ একটি অন্তর্র্বতী সরকার গঠন করা হবে। সেই সরকার তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দেবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমানে রাষ্ট্রপতি হলেন প্রধান। তিনি যখন আমাদের ডাকবেন তখন নাম প্রস্তাব করা হবে।

আন্দোলনের নিহত শিক্ষার্থীসহ অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি আমরা স্মরণ করছি। এই আন্দোলনে যেসব রাজনৈতিক দল ছিলেন এবং আছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। একইসঙ্গে মনে করি আমাদের ওপর অনেক বড় দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। বিশেষ করে দেশের যেসব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে তা গণতান্ত্রিকভাবে গড়ে তোলা।

সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আপনাদের (সাংবাদিক) কাছে বিষয়টি খুব জোর দিয়ে অনুরোধ রাখতে চাই এই বার্তাটি সবার কাছে পোঁছে দেন। যারা এখনো সহিংসতা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করছেন তারা অবিলম্বে বন্ধ করুন। এখন রাগ, ক্ষোভ, প্রতিহিংসাপরায়ণ হওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বলব এই ব্যাপারে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে সহিংসতাকারীদের প্রতিরোধ করুন।
এর আগে সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন দলটির নেতারা। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হওয়া বৈঠকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন ড. আব্দুল মঈন খান, সালাউদ্দিন আহমেদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।