এটা আবু সাঈদের বাংলাদেশ, আমরা সবাই আবু সাঈদ: ড. ইউনূস

Published: 10 August 2024

বিশেষ সংবাদদাতা :


অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এটা আবু সাঈদের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা সবাই আবু সাঈদ। আবু সাঈদের মা সবার মা। এখানে যারা আছে (আবু সাঈদের পরিবার) তাদের রক্ষা করতে হবে। তার মা আছে, বোন আছে, তাদের রক্ষা করতে হবে।

শনিবার (১০ আগস্ট) সকালে রংপুরের পীরগঞ্জে কোটা আন্দোলন ঘিরে পুলিশের গুলিতে প্রথম শহীদ হওয়া আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকের তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আবু সাঈদ প্রতিটি ঘরেই আছে। যাদের ঘরে সন্তান আছে তারাই এখন বলছে আমি আবু সাঈদ হব এবং তার পথ অনুসরণ করে অনেক সন্তান নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে। এখন সবাই প্রতিবাদ করছে। সুতরাং আপনারা খেয়াল রাখবেন কোথাও যেন গোলযোগ না হয়। দেশের সব সন্তানই আবু সাঈদ। এই সন্তানদের রক্ষা করা এখন আমাদের কর্তব্য। আমরা যেন এটা নিশ্চিত করতে পারি। আমরা সবাই বাংলাদেশি। আমরা সবাই দাঁড়াব যেমনটা আবু সাঈদ দাঁড়িয়েছে প্রতিবাদে। আমরা আজকে যে উদ্দেশে এসেছি সেটা যেন বাস্তবায়ন করতে পারি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এখানে হিন্দু পরিবার হোক, মুসলমান পরিবার হোক, বৌদ্ধ পরিবার হোক, সবার ঘরের সন্তান এই আবু সাঈদ। কাজেই আপনারা খেয়াল রাখবেন কোথাও কোনো গোলযোগ যেন না হয়। কেউ ধর্ম নিয়ে কথাবার্তা না বলে। কারণ আমরা এই মাটিরই সন্তান, সবাই আবু সাঈদ।

যে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আবু সাঈদ প্রাণ দিয়েছেন তার কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, এই মাটির সন্তানদের রক্ষা করা জাতি, ধর্ম, নির্বিশেষে, এটা আমাদের এখন কর্তব্য। আমরা যেন এটা নিশ্চিত করতে সামনে গিয়ে দাঁড়াই। আবু সাঈদ যেভাবে দাঁড়িয়েছেন আমাদেরও এভাবে দাঁড়াতে হবে।

এর আগে সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে পীরগঞ্জ যান ড. ইউনূস। তারপর বাবনপুরে আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়ে তার কবর জিয়ারত করেন। এ সময় সাঈদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ড. ইউনূসের আগমনকে ঘিরে গোটা পীরগঞ্জ উপজেলা সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে।

এ সময় অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া সঙ্গে ছিলেন। এছাড়াও রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসানসহ জেলা ও উপজেলার প্রশাসনের ঊর্দ্ধতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্ক মোড়ে পুলিশ, ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। পরদিন ১৭ জুলাই পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।