শনিবার চালু হচ্ছে না মেট্রোরেল
বিশেষ সংবাদদাতা :
প্রয়োজনীয় কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু না হওয়ায় শনিবার (১৭ আগস্ট) মেট্রোরেল চালু হচ্ছে না। তবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের একটি অংশ বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ ৬ দাবিতে কর্মবিরতিতে থাকায় নির্ধারিত তারিখে মেট্রোরেল চালু করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল পরিচালনা প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ডিএমটিসিএলের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার গত ১১ আগস্ট ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের আওতায় পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণাধীন এমআরটি লাইন ৬-এর মেট্রোরেল চলাচল প্রয়োজনীয় কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সাত দিনের মধ্যে পুনরায় চালু করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। অনিবার্য কারণবশত মেট্রোরেল পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনও শুরু করা সম্ভব হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাত্রীবিহীন পরিচালন পরীক্ষণ শেষে মিরপুর-১০ এবং কাজীপাড়া স্টেশন ছাড়া অপর ১৪টি স্টেশন সমন্বয়ে মেট্রোরেল পুনরায় চালুর জন্য মেট্রোরেল সিস্টেম ও মেট্রো ট্রেনে যাতায়াতকারী যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আবশ্যক।
ডিএমটিসিএলের একটি সূত্র জানায়, কোনও টেকনিক্যাল বিষয়ের কারণে মেট্রোরেল চলাচলে এই দেরি হচ্ছে না। মূলত ডিএমটিসিএলের ১০ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের কর্মবিরতির কারণে শনিবার মেট্রোরেল চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না। এর আগে গত ৮ আগস্ট মেট্রোরেলের উত্তরা ডিপোর সামনে এক মানববন্ধনে বৈষম্য দূরীকরণের ব্যানারে ডিএমটিসিএলের ১০ থেকে ২০ তম গ্রেড পর্যায়ের ৭০০ এরও বেশি কর্মচারী ছয় দফা দাবি আদায়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে গত ৬ তারিখ থেকে তারা বেতন বৃদ্ধিসহ কয়েকটি দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
তাদের মানববন্ধনের পর কয়েক দফা মিটিংয়ে মাধ্যমে তাদের দাবি মেনে নেওয়া হয় ও কাজে যোগদানের অনুরোধ করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারা এখনই লিখিত চায়। তবে ডিএমটিএল সূত্র বলছে, বোর্ড মিটিং ছাড়া সেটা করার এখতিয়ার কারোর নেই। এখন আবার সচিব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হওয়ায় তাকে বুধকার (১৪ আগস্ট) বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে জরুরি বোর্ড মিটিং ডাকতে বলা হবে কাকে, সেটাও ঝুলে গেছে।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ডাকা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ১৯ জুলাই তারা হামলা চালিয়েছে মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশনে। এর আগে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে ১৭ জুলাই বিকেল থেকে বন্ধ রাখা হয় মেট্রোরেল চলাচল। আর এই প্রেক্ষাপটে ২০ জুলাই সকালে জরুরি মেরামতের প্রয়োজনে এবং জনগণের জানমালের নিরপত্তার স্বার্থে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে ডিএমটিসিএল।
তবে কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাত্রীবিহীন পরিচালনা পরীক্ষা শেষে ডিএমটিসিএলকে মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন ছাড়া অপর ১৪টি স্টেশন দিয়ে মেট্রোরেল পুনরায় চালু করতে মেট্রোরেল সিস্টেম ও মেট্রো ট্রেনে যাতায়াতকারী যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।