ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে : সমন্বয়ক সারজিস

Published: 16 August 2024

বিশেষ সংবাদদাতা :


ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে ১৫ আগস্টের ঘটনাবলী নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে আয়োজিত সাংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

সারজিস আলম বলেন, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ পুলিশের মাধ্যমে হেজাফতে ইসলামের সমাবেশের সময় কান ধরে ওঠবস করানোর সংস্কৃতি শুরু করেছিল। তবে ১৫ আগস্ট কান ধরে ওঠবস করানো ও মোবাইল চেক করাসহ ঘটে যাওয়া কিছু কাজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

তিনি বলেন, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কেউ যদি শোক পালন করতে চায়, ফুল দিতে যেতে চায় আমরা আমাদের জায়গা থেকে বাধা দিতে পারি না। এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর গাড়িতে হামলার অধিকার কারো নেই। তাই এসবের সঙ্গে সমন্বয়ক বা অন্য কেউ জড়িত থাকলে বহিষ্কার এবং ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাইরের রাষ্ট্রের মদদে প্রতি বিপ্লবের নামে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন সারজিস আলম। তিনি মনে করেন, ১৫ আগস্ট ঘিরে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ ছদ্মবেশে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।

সমন্বয়ক বলেন, ‘আমরা ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রীয় আয়োজনে শোক দিবস পালনের পক্ষে না। তবে কেউ ব্যক্তিগতভাবে শোক প্রকাশ করতে চাইলে তাকে সম্মান জানাতে হবে।’

সারজিস বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে লক্ষ্য করেছি ধানমন্ডি ৩২ এবং ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, যেটা আমাদের গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে যায় না। আমরা যেই বাংলাদেশের প্রত্যাশা করি সেটির সাথে এটি কোনোভাবেই যায় না।

তিনি বলেন, আমরা ভাইরাল ভিডিও দেখেছি যে আমার বাবার বয়সী লোককে কান ধরে উঠবস করানো হচ্ছে, বিবস্ত্র করানো হয়েছে। মানুষজন যা ইচ্ছা তাই বলছে, অসংখ্য মানুষের ফোন চেক করা হচ্ছে। আমি দেখেছি আমার মায়ের বয়সী একজনের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। সাংবাদিকদের ওপরে হামলার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। এমন নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।

আমরা খুঁজছি এগুলোর সাথে আমাদের কোনো সমন্বয়ক কিংবা সহ-সমন্বয়ক যুক্ত আছে কি না। আমাদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ডিসিশন আমরা খুঁজে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে যদি এসব কাজে যুক্ত দেখি কমিটি থেকে তাকে বহিষ্কার করবো।

তিনি আরও বলেন, যেই ঘটনাগুলো অতিরঞ্জিত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যা করার প্রয়োজন একটি প্রেসার গ্রুপ হিসেবে আমরা কাজ করবো। আইনের মাধ্যমে কারণ তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।

সারজিস বলেন, আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট কথা, যে স্পিরিটকে সামনে রেখে আমরা এই গণবিপ্লব করেছি.. গত ১৬ বছরে মানুষের কথা বলার অধিকার হরণ হয়েছিল, দুর্নীতি, অবিচার এগুলোর বিরুদ্ধে এই গণবিপ্লব। এর কারণ ছিল আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই যেখানে সবাই সবার কথা বলতে পারবে, সবাই মত প্রকাশ করতে পারবে। যে যেই ধারায় বিশ্বাসী, সেই কাজ করতে পারবে এবং স্বাধীনতা থাকবে।

এ সময় শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে ট্রাফিকের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন সারজিস।