বিনামূল্যে ফ্লাইটের টিকিটের তারিখ পরিবর্তন করতে পারবেন যাত্রীরা

Published: 23 August 2024

বিশেষ সংবাদাতা :


দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে অনেক যাত্রী প্লেনের টিকিট কেটেও আসতে পারেননি, ফ্লাইট মিস করছেন। সেসব যাত্রীর প্লেনের টিকিট পরবর্তী তারিখে বিনামূল্যে রি-ইস্যু বা রি-বুক করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চলাচলকারী ৩৩টি এয়ারলাইন্সকে এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিটি ইস্যু করেছেন শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম।

চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অনেক যাত্রী বিমানবন্দরে আসতে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেকে তাদের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ধরতে পারছেন না। এ পরিস্থিতিতে এয়ারলাইন্সগুলোকে তাদের যাত্রীদের সহযোগিতা করার অনুরোধ করা হচ্ছে। এছাড়াও যাত্রীদের জন্য এয়ারলাইন্সগুলোকে ২৪ ঘণ্টা যাত্রীসেবা নিশ্চিত এবং বন্যাকবলিত এলাকার যাত্রীদের ফ্লাইটের টিকিট বিনামূল্যে পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাত থেকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টিতে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যা সবচেয়ে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে ফেনীতে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়ি এবং কক্সবাজার জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। এসব জেলায় বন্যায় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

১৪.
এস আলম ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

রাজধানীর আদাবর থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে পোশাককর্মী মো. রুবেল হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাতে নিহত রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদাবর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিন্টু চন্দ্র বণিক।

এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও আসামি করা হয়েছে- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শেখ ফজলুল করিম, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলম মাসুদ (এস আলম), তার দুই ছেলে আহসানুল আলম মারুফ (৩০) ও আশরাফুল আলমসহ (২৮) মোট ১৫৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট আদাবর থানার রিং রোডে এক প্রতিবাদী মিছিলে গুলিবিদ্ধ হন পোশাককর্মী মো. রুবেল। পরবর্তী সময়ে তাকে গ্রিনরোড সেন্ট্রাল হসপিটালে নেওয়া হয়। এরপর সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠান। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে অপারেশন পরবর্তী আইসিইউ স্বল্পতায় সিটি কেয়ার জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৭ আগস্ট সকাল ১০টায় মারা যান রুবেল।

১৫.
ঢাকায় আসছেন মার্কিন সিনেটর ডিক ডারবিন

ঢাকা সফরে আসছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ডিক ডারবিন। আগামী ২৬ আগস্ট তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসবেন তিনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা সফরকালে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন ডিক ডারবিন। এছাড়া পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গেও বৈঠক করবেন এই মার্কিন সিনেটর।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোনো শীর্ষ পর্যায়ের নেতার ঢাকা সফর। ডিক ডারবিন বিগত ২২ বছর ধরে সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বন্ধু তিনি। বিগত শেখ হাসিনার সরকারের সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তিনি। ড. ইউনূসকে হয়রানি না করার জন্য একাধিকবার শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন ডারবিন।

অন্তর্বরর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের এই রাজনৈতিক নেতা সফরকালে বিভিন্ন বৈঠকে দুদেশের মধ্যে আগামী দিনের সম্পর্কের বার্তা দেবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

১৬.

যে যেভাবে পারেন বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান: জিএম কাদের

বন্যাদুর্গত মানুষের সহায়তা করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেছেন, যে যেভাবে পারেন বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ তহবিল গঠন বিষয়ক সভায় সভাপতি হিসেবে বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, বন্যাদুর্গতরা আমাদের ভাই। আমরা তাদের পাশে ছিলাম, পাশে আছি এবং পাশে থাকব। এমন মানবিক বিপর্যয়ে ভাইদের পাশে আমরা সবসময় থাকব। একইসাথে বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কাজেও জাতীয় পার্টি দুর্গত মানুষের পাশে থাকবে।

তিনি বলেন, বন্যার শুরু থেকেই জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীরা স্থানীয়ভাবে বন্যাদুর্গতদের পাশে আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাইলে আমরা তাদেরকেও সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছি। তিনি মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে বলেন, যারা বন্যায় নিহত হয়েছেন তাদের যেন মহান আল্লাহ শহীদী মর্যাদা দান করেন।

এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, কোনো সতর্কীকরণ ছাড়া ভারত বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশে এই ভয়াবহ বন্যা। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী উজানের কোনো রাষ্ট্র যদি নদীর গেইট খুলে দেয় তাহলে অবশ্যই ভাটির দেশগুলোকে আগাম জানিয়ে দেওয়ার বিধান রয়েছে। অথচ গেইট খুলে দেওয়ার আগে ভারত সরকার বাংলাদেশকে কোনোরকম সতর্ক করেনি। এই সভা থেকে ভারতের এমন কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাচ্ছি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের কো-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম আব্দুল মান্নান, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, অ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত, মোস্তফা আল মাহমুদ, শেরীফা কাদের, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মনিরুল ইসলাম মিলন, ড. নুরুল আজহার শামীম, মাসরুর মওলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মমতাজ উদ্দিন, হারুন অর রশীদ, মো. খলিলুর রহমান খলিল, মেজর (অব.) আনিসুর রহমান, মেজর (অব.) মাহফুজুর রহমান, জাহিদ হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ, মাইনুর রাব্বী রুম্মন, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান, শফিউল্ল্যাহ শফি, এইচএম শাহরিয়ার আসিফ, মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, সমরেশ মণ্ডল মানিক প্রমুখ।

১৭.
ফেনীর ৯২ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার অচল

দেশের বন্যাকবলিত ১০ জেলার প্রায় ১১ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার অচল হয়ে পড়েছে। শুধু ফেনী জেলায় ৯২ শতাংশ টাওয়ারই অচল হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ-সংযোগ না থাকা এবং টাওয়ার এলাকা ডুবে যাওয়ায় নেটওয়ার্ক সচল করা যাচ্ছে না।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকেল ৩টা পর্যন্ত বন্যাকবলিত অঞ্চলের মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্যে এ কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

বিটিআরসি জানিয়েছে, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলার ১৩ হাজার ২৪০টি টাওয়ারের মধ্যে আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত ১ হাজার ৪৬১টি টাওয়ার অচল ছিল। এর মধ্যে ফেনী জেলার ৯১ দশমিক ৯ শতাংশ টাওয়ারই অচল হয়ে গেছে। এরপর নোয়াখালী জেলার ২১ শতাংশের বেশি, খাগড়াছড়ির ১৫ শতাংশের বেশি ও কুমিল্লার প্রায় ১৪ শতাংশ টাওয়ার অচল।

সেনাবাহিনীর সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় টাওয়ার সচল করতে সমন্বয়ের কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি। তবে যেসব টাওয়ার এলাকা ডুবে গেছে, পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত সচল করার কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। ফেনী জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত টাওয়ার সচল করা কাজ চ্যালেঞ্জিং ও সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সিলেট ও মৌলভীবাজার এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় সেখানে যোগাযোগ স্থাপন কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করেছে বিটিআরসি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে ১১টি জেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এই জেলাগুলোয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪৫ লাখ। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬২৯টি পরিবার। অতি বৃষ্টি ও উজানের পানির ঢলে এসব জেলার অনেক এলাকা ডুবে গেছে।