আন্দোলনে ছাত্রলীগসহ যারা অস্ত্র ব্যবহার করেছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে : ডিএমপি কমিশনার

Published: 24 August 2024

বিশেষ সংবাদদাতা :


আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ যারা অস্ত্র ব্যবহার করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান।

শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ‘কমিশনার’স মিট দ্যা প্রেসে’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশের কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেন, ইতোমধ্যে কিছু ভিআইপিকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে আনা হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে যারা অর্থ, পরামর্শ ও বক্তৃতা কিংবা বিবৃতি দিয়ে উৎসাহিত করেছেন এসব বিষয় তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এ সময় পুরো বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, যারা অপেশাদার আচরণ করেছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ যারা অস্ত্র ব্যবহার করেছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কাজ শুরু করবো, তবে সেটি চ্যালেঞ্জিং।

মো. মাইনুল হাসান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর ৫০টি থানার মধ্যে ২২টি পুড়েছে, অনেক পুলিশ সদস্য আহত- নিহত হয়েছেন। যার জন্য এখনো অনেকটা আতঙ্কে আছে এ বাহিনী। তাই পুলিশ পূর্ণরূপে ফিরে আসতে কিছুটা সময় লাগবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কাজ শুরু করব।

এ সময় পুরো বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর কথা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যারা অপেশাদার আচরণ করেছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

বিশেষ কয়েকটি জেলার পুলিশ সদস্যরা ডিএমপিতে গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে ছিলেন। আপনার দায়িত্ব পালনকালীন এসব বিশেষ জেলার কর্মকর্তাদের পদায়ন হবে কি-না। এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমি এ বিষয়ে একমত নয়। পুলিশ বাহিনীর সবাই পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করবে। কে কোন জেলা থেকে এলো সেটি বিবেচনার বিষয় নয়। আমরা চায় একটি সুন্দর সুশৃঙ্খল পুলিশ বাহিনী তৈরি করতে। যেখানে সকল পুলিশ সদস্যের কাজ হবে পেশাদার।

মোহাম্মদ মাইনুল হাসান বলেন, যেসব পুলিশ কর্মকর্তার ওপর আস্থার সংকট আছে তারা আর থাকবেন না। নতুন মুখ দেখতে পাবেন। তবে পুরো আস্থা ফিরিয়ে আনতে কতদিন সময় লাগবে তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। পুলিশের উচ্চপর্যায়ে বিশেষ কোনো জেলা এখন আর প্রাধান্য পাবে না। মূল টার্গেট থাকবে পেশাদারিত্ব। অন্যায়, দুর্নীতির কোনো স্থান থাকবে না।

সাম্প্রতিক ঘটনায় হওয়া মামলায় ক্রিকেট তারকা ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের নাম কীভাবে এলো? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাইনুল হাসান বলেন, সহিংসতায় অনেকেই অনেকভাবে সহযোগিতা করেছেন। কেউ অর্থ দিয়ে, কেউ বা বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে উসকানি দিয়েছেন। এমন নানা বিষয়ে তাই মামলা হতেই পারে। আমরা তদন্তের সময় প্রমাণ সংগ্রহ করব।

যারা ট্রাফিক পুলিশের অনুপস্থিতিতে ট্রাফিক সামলেছেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে মাইনুল হাসান বলেন, যারা মনোবল বৃদ্ধিতে কাজ করেছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ। এখন ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করুন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সহিংতায় নিহতের বিষয়ে তিনি বলেন, ডিএমপিতে নিহত হয়েছেন ১৪ জন পুলিশ সদস্য। এ সময় আহত হয়েছেন পুলিশের ৪২৭ সদস্য। এ ছাড়া সাধারণ নাগরিক নিহতের সঠিক তথ্য যাচাই করার চেষ্টা চলছে।

নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেন, আপনাদের প্রতি অনুরোধ কোন ধরনের অপরাধমূলক কাজ অংশ নেবেন না। যে যেখানে আছেন আইন ও বিধি মেনে চলুন। আমরা সব সময় আপনাদের পাশে আছি। একই সাথে আমরা আপনাদের সহযোগিতাও কামনা করি। দেশের এই ক্রান্তিকালে পূর্ণাঙ্গ পুলিশ সেবা পেতে হয়তো একটু সময় লাগতে পারে। আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আমাদের পেশাদারিত্ব দিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা তো আমরা করে যাব।

‘আপনারা জানেন ইতোমধ্যে বিভিন্ন থানায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা এটা চলমান প্রক্রিয়া। এটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে হয়তো সময় লাগতে পারে। আর বিভাগীয় ব্যবস্থার বিষয়গুলো আসলে চলমান,’ বলেন তিনি।