সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী গ্রেপ্তার
বিশেষ সংবাদদাতা :
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ও গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাতে রাজধানীর শান্তিনগরের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী। তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্টন থানার ওসি মোল্লা মো. খালিদ হোসেন বলেন, সাবেক পাটমন্ত্রীকে শান্তিনগরের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি সম্বন্ধীর বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। সেখান থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল তাকে আজ রাতে গ্রেপ্তার করে। পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
তবে গত ২০ আগস্ট থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় করা অন্তত আটটি হত্যা মামলার আসামি গোলাম দস্তগীর গাজী। মামলাগুলো হলো নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে শ্রমিক জনি, শফিক মিয়া ও আশিক মিয়া, সিদ্ধিরগঞ্জে গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তার ও কিশোর হুসাইন, আড়াইহাজারে বিএনপি নেতা বাবুল মিয়া ও শফিকুল ইসলাম শফিক এবং রূপগঞ্জে স্কুলছাত্র রোমান মিয়া হত্যা মামলা।
গোলাম দস্তগীর গাজী ২০০৮ সাল থেকে টানা চারবার নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তিনি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০২০ সালে তিনি স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে স্বাধীনতা পুরস্কার পান।
রূপগঞ্জে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর আনন্দ মিছিল বের হলে সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় স্কুলছাত্র রোমান মিয়া। এ ঘটনায় নিহতের খালা রিনা বাদী হয়ে ২১ আগস্ট সকালে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ মামলায় হুকুমের আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী, তাঁর ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা গাজীকে।
নিহত রোমান রূপগঞ্জের চনপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। সে চনপাড়া নব কিশালয় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
মামলার অভিযোগে বাদী রিনা বলেন, ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের খবরে ছাত্র জনতার আনন্দ মিছিল চলছিল। এ সময় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পিস্তল, আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রূপগঞ্জের চনপাড়া এলাকার জনকল্যাণ স্কুলের সামনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়। এ সময় আসামিরা ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তাদের গুলিতে গুরুতর আহত হয় রোমান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পূর্বগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।