বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করলেন মোদি-বাইডেন
বিশেষ সংবাদদাতা :
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
সোমবার (২৬ আগস্ট) এই দুই নেতা তাদের আলোচনায় বাংলাদেশে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করেন। আলোচনায় তারা সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। ফোনালাপে তারা ইউক্রেন ও কোয়াড সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেন।
দুই নেতা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মোদি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমি শান্তি ও স্থিতিশীলতার দ্রুত প্রত্যাবর্তনের জন্য ভারতের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। মোদি বাইডেনের কাছ থেকে টেলিফোন কল পেয়ে আলাপে যোগ দেন।
বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারত্বের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতিশ্রুতির জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নরেন্দ্র মোদি। তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করেন। তারা একমত হন যে, ভারত-মার্কিন অংশীদারত্ব উভয় দেশের জনগণের পাশাপাশি সমগ্র মানবতার উপকার করার লক্ষ্যে।
দুই নেতার মধ্যে বেশকিছু আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়েছে। সম্প্রতি মোদি ইউক্রেন সফর করেন বলে বাইডেনকে জানান। তিনি সংলাপ ও কূটনীতির পক্ষে ভারতের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ইউক্রেনে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দ্রুত ফিরিয়ে আনার জন্য তার পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া দুই নেতা কোয়াডসহ বহুপাক্ষিক ফোরামে সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
দুই বছর ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের গুরুতর নেতিবাচক ফল ভোগ করেছে প্রায় সারা বিশ্ব। বিষয়টির মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছেন নরেন্দ্র মোদি। ইউক্রেন সফরে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সফরে মোদি চলমান যুদ্ধ বন্ধে মীমাংসার চেষ্টা করেন।
কিন্তু সম্প্রতি রাশিয়ার ভূখণ্ডে বড় ধরনের পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এ অবস্থায় নিজেকে সম্ভাব্য শান্তি প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে উপস্থাপন করছেন মোদি। সফরের বিষয়ে মোদি জানিয়েছেন, ‘সংকট সমাধান আমরা যুদ্ধের মাধ্যমে করতে পারব না। এজন্য কূটনৈতিক সমাধান খুঁজতে হবে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে ভারত সংলাপ ও কূটনীতিকে সমর্থন করবে।’
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদিই প্রথম ইউক্রেন সফর করেছেন। এ কারণে তার সফর ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেনের অনেকেই মোদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন বলে মনে করেন। ফলে মোদি একজন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কতটুকু কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় দেখা গেছে। তা ছাড়া গত জুলাইয়ে মস্কো সফরে গিয়ে মোদি ইউক্রেনবাসীর নিন্দার মুখে পড়েছিলেন। যদিও মোদি বলেছেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শান্তিপূর্ণভাবে মীমাংসার জন্য তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে তার দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় করেছেন। একই সঙ্গে ভারত ও ইউক্রেনের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি।