শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদের প্রতীক : দুদু
বিশেষ সংবাদদাতা :
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান গণতন্ত্রের প্রতীক। বিএনপি গণতন্ত্রের প্রতীক। শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদের প্রতীক। এই ভিন্নতা যারা মাথায় না নিতে পারবেন তারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে কি হচ্ছে কি হবে এটা ব্যাখ্যা করে সামনে এগুতে পারবেন না।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারের ফরমায়েশি সব মামলা ও সাজা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে, আমরা এ সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছি। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, বিএনপি মহাসচিবসহ বিরোধীদলের ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে আড়াই লাখ মামলা রয়েছে। তারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, অনেকে জেলে আছে, যাবজ্জীবন, ফাঁসির অর্ডার নিয়ে জেলে আছে তারা এখনো মুক্তি পাইনি।
বিএনপির এ নেতা বলেন, এদের মামলা যতক্ষণ প্রত্যাহার না হবে, এদের মুক্তি যতক্ষণ না হবে ততক্ষণ ধরেই নিতে হয়, এই সরকারের বড় দাগের কোনো কাজ এখনও তারা সম্পন্ন করতে পারেনি। এই সরকার আমাদের সরকার, গণতন্ত্রের সরকার, আন্দোলনের সরকার, ছাত্র-জনতার সরকার তাহলে গণতন্ত্রের পক্ষে যারা কাজ করছে তারা যদি মসিবতে থাকে, তারা যদি কষ্টে থাকে, তারা যদি এখনো নির্যাতনের মুখোমুখি হয় তাহলে এটা এই সরকারের জন্য খুব ভালো সংবাদ বয়ে আনে না। কারণ এই সরকার তো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্যে আমরা অধিষ্ঠিত করেছি।
দুদু বলেন, এ সরকার আমাদের সরকার, গণতন্ত্রের সরকার, ছাত্র-জনতার সরকার। এ সরকার থাকা অবস্থায় যদি গণতন্ত্রকামী মানুষ কষ্টে থাকে, নির্যাতনে থাকে, তাহলে তা ভালো সংবাদ বয়ে আনে না। কারণ এ সরকার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে দলের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াতে হবে। সব রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায়নের প্রশ্নে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে সবসময় সর্তক থাকতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, মেহনতি মানুষের, সাধারণ জনগণের, রিকশাচালকের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন। তারা যেন ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধিকে নির্বাচন করতে পারে এ অধিকারটা দিন।
তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবার মানসিক পরিবর্তন দরকার। এতদিন শেখ হাসিনার নির্দেশে চাকরি হারানোর ভয়ে কাজ করেছেন। এখন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যেতে হবে। এ ছাড়া আমরা ভালো কিছু করতে পারব বলে আমার মনে হয় না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, দেশটা আমাদের। চারপাশে কিছু মুখোশধারী বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে, চাঁদাবাজির চেষ্টা করছে। বিএনপি স্পষ্টভাবে বলেছে, এরা দুষ্কৃতিকারী। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, এদেরকে ঠেকাতে হবে, এদের ধরে পুলিশে দেন। এই জায়গায় কোনো আপোষ করা যাবে না। সে যেই হোক তাকে মানুষের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, অর্থনীতির স্বার্থে, রাজনীতির স্বার্থে এই দুবৃর্ত্তায়ন যারা করে গেছে তাদেরকে আমরা ১৭ বছর এদের বিরোধিতা করেছি। সেই দুর্বত্তদের সমর্থন করার কোনো সুযোগ নাই। যেখানে যে অবস্থায় পাবেন তাদেকে আইনের কাছে সোপর্দ করতে হবে।
দুদু বলেন, কেউ কেউ বলছেন, বন্যায় ভাসছি, আবার এখন নির্বাচনের দরকার কি? যারা যেমনে তারা তেমনই কথা বলতে বলে এটা আমার ধারণা। কিছু মানুষ আছে, কিছু দল আছে আমাদের সঙ্গে থাকলেও ১৯টা সিট পায়, আমাদের বেরিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকলে তারা তিনটা সিট পায়, তারা ভোট তো ভয় পাবে, এটা অস্বাভাবিক কিছু না। সেজন্য ভোট ছাড়া, মানুষের ভোটিং পাওয়ার ছাড়া কোনো দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এটা আমার জানা নেই।
বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহবায়ক এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।