পাকিস্তানে রেলস্টেশনে আত্মঘাতী হামলা, নিহত বেড়ে ২৭

Published: 9 November 2024

পোস্ট ডেস্ক :


পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটার একটি রেলস্টেশনে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আরও অর্ধশতাধিক।

এই হামলার ফলে বেলুচিস্তানের শান্তি-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।

কোয়েটার কমিশনার হামজা শাফকাত নিশ্চিত করে বলেছেন, বিস্ফোরণটি একটি আত্মঘাতী হামলা ছিল এবং এ ঘটনায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার (এলইএ) সদস্যরাও শহিদ হয়েছেন।

এছাড়া আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিনি কোয়েটার জনগণকে রক্তদান করার আহ্বান জানিয়েছেন। কেননা শহরটির সিভিল হাসপাতালে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করা হয়েছে এবং রক্তের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

ঘটনাস্থল ও প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া

বিস্ফোরণটি কোয়েটা রেলস্টেশনের বুকিং অফিসে ঘটে, যেখানে সবসময়ই ভিড় থাকে। বিস্ফোরণের পর পুলিশ এবং উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আত্মঘাতী হামলাকারী একটি ব্যাগে ৮ থেকে ১০ কেজির বিস্ফোরক নিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করে। হামলার সময় জাফর এক্সপ্রেস নামক ট্রেনটি পেশোয়ারের উদ্দেশ্যে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

তদন্ত ও প্রতিবেদন

বিস্ফোরণের পর ঘটনার তদন্ত করে কাউন্টার টেরোরিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি) তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে আত্মঘাতী হামলাকারীর পরিচয় শনাক্ত করার জন্য ফরেনসিক পরীক্ষা ও জাতীয় ডাটাবেস ও রেজিস্ট্রেশন অথরিটি (নাদ্রা)-র সহায়তা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

শোকবার্তা ও নিন্দা

দেশটির অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ ইউসুফ রাজা গিলানি এবং বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গিলানি এই ঘটনাকে ‘মানবতার শত্রুদের’ কাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের সম্পূর্ণ নির্মূলের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

অন্যদিকে বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে এই হামলার পর, পাকিস্তানের অন্যান্য প্রদেশের নেতারাও তাদের শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।

সন্ত্রাসবাদ বৃদ্ধি

সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (সিআরএসএস) এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পাকিস্তানে চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলায় ৭২২ জন নিহত হয়েছেন এবং ৬১৫ জন আহত হয়েছেন।

সর্বশেষ এই ঘটনার ফলে বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসবাদের বিপজ্জনক বৃদ্ধি এবং পাকিস্তানজুড়ে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।