অর্থের অভাবে মাটিচাপা দেয়া হল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হিন্দু পরিবারের ৬ জনকে
বিশেষ সংবাদদাতা, ঢাকা : অর্থের অভাবে মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত টাঙ্গাইলের নাগরপুরের একটি হিন্দু পরিবারের ছয় সদস্যকে সৎকার না করে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ভাদ্রা গ্রামে নিহতদের নিজ বাড়ির আঙিনায় মাটিচাপা দেয়া হয়েছে।
নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের হরে কৃষ্ণ বাদ্যকার (৫৫), তার ছেলে গোবিন্দ বাদ্যকার (২৮), গোবিন্দর স্ত্রী ববিতা বাদ্যকার (২৫), মেয়ে রাধে বাদ্যকার (৪), চাচি খুশি বাদ্যকার (৫২) ও চাচাতো ভাই রাম প্রসাদ বাদ্যকার (৩০)। একই পরিবারের শিশু ও নারীসহ ছয় সদস্য নিহতের ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ইউপি সদস্য মো. বেল্লাল সরদার জানান, নিহতের পরিবারে হরে কৃষ্ণ বাদ্যকারের স্ত্রী ঝর্ণা বাদ্যকার এবং নিহত দুই ভাইয়ের স্ত্রী ছাড়া আর কেউ নেই। তারা খুবই দরিদ্র ও অসহায়। একসঙ্গে ৬টি লাশ দাহ করতে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। এত টাকা ওই পরিবারের পক্ষ থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়।
তাই সবার সিদ্ধান্তে লাশগুলো সকালে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। তবে নিহতের স্বজনরা যদি দাহ করার দাবি জানাতেন তাহলে আমাদের সহযোগিতায় লাশগুলো দাহ করা হতো।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান খান জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে হরে কৃষ্ণ বাদ্যকারের পরিবারের মাঝে আর্থিক অনুদান দেয়া হবে। এছাড়াও ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।
এদিকে শনিবার সকালে লাশগুলো মাটিচাপা দেয়ার ঘণ্টাখানেক পর জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিহতদের বাড়ি পরিদর্শন করে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আমিনুল ইসলাম, নাগরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিন মসরুর প্রমুখ।
এ বিষয়ে নাগরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিন মসরুর জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের বাড়িতে গিয়ে হরে কৃষ্ণের পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, চাচাতো ভাই রাম প্রসাদ বাদ্যকারের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।
তবে অর্থের অভাবে তাদের মাটিচাপা দেয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। আর এ বিষয়ে তাকে কেউ অবগত করেননি। যদি নিহতের স্বজনরা কেউ তাকে অবগত করতেন তাহলে অবশ্যই প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাশের শেষকৃত্য সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয়া হতো।