ডি ককের ‘প্রতারণার’ সমালোচনায় ক্রিকেটবিশ্ব

Published: 5 April 2021

পোস্ট ডেস্ক : ৩৪২ রানের পাহাড় টপকাতে গিছে অতিমানবীয় ব্যাটিং করছিলেন ফখর জামান।

সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে পাকিস্তানকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। নিজেও ছিলেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরির পথে। রোহিত শর্মা (ওয়ানডেতে ৩টি ডাবল) ছাড়া ওয়ানডেতে আর কারো নেই একাধিক ডাবল সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে একাধিক ওয়ানডে দ্বিশতকের মাইলফলকের কাছে গিয়েও ফখর থামেন ১৯৩ রানে। ১৫৫ বলে ১৮ বাউন্ডারি ও ১০ ছক্কায় সাজানো ১৫৫ বলের ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটে বিতর্কিত রানআউটে। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি কক ফখরকে থামাতে আশ্রয় নেন চাতুরতার। ক্রিকেট আইনের পরিপন্থী কাজ করায় ডি ককের সমালোচনায় ক্রিকেটবিশ্ব।

সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার অ্যালান উইকিন্স টুইটারে রান আউটের মুহূর্তের ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আমি বারবার দেখেছি।
আমার কাছে মনে হয়েছে, এটা স্পষ্ট প্রতারণা।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৬ টি-টোয়েন্টি খেলা শেরফান রাদারফোর্ড টুইটারে লিখেছেন, ‘ডি কক তোমার এমন আচরণে কষ্ট পেলাম। এসব করার পর তুমি যতই ভালো ইনিংস খেলো না কেনো সেটার মূল্য নেই। ডি ককের এমন প্রতারণা আইসিসির নিয়মের মধ্যে পড়ে কি না আমি জানি না। তোমাকে অনুরোধ এমন কাজ ভদ্র লোকের এই খেলায় আর করো না।’ পাকিস্তানের সাবেক গতি তারকা শোয়েব আখতারের টুইট, ‘কুইন্টন ডি ককের করা রানআউট কি (ক্রিকেটের) চেতনাবিরোধী নয়? সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার আপনাদের।’
লুঙ্গি এনগিডির করা ৫০তম ওভারের প্রথম বলে লং অফে ঠেলে দুই রানের জন্য দৌড়াচ্ছিলেন স্ট্রাইকে থাকা ফখর। মার্করাম থ্রো করেছিলেন উইকেটরক্ষকের দিকে। ফখর উল্টো দিকে দৌড়ানোয় তা খেয়াল করেননি। তার সামনে ছিলেন ডি কক। প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক হাত তুলে বলটা বোলারের প্রান্তে থ্রো করার ইঙ্গিত করছিলেন মার্করামের প্রতি। তা দেখে ফখর দৌড়ের গতি কমিয়ে দেন, একবার পেছনেও তাকান। ডি ককের ইঙ্গিত দেখে তিনি ভেবে নেন থ্রোটা যাবে বোলারের প্রান্তে। কিন্তু এতেই বোকা বনে গিয়ে ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার সুযোগটা হারাতে হয় ফখরকে। উইকেটরক্ষকের প্রতি মার্করামের থ্রো সরাসরি স্টাম্প ভেঙে দেয়। ডি কক কাজটি ইচ্ছা করে করলে তা ক্রিকেটের আইনপরিপন্থী। ক্রিকেটের ৪১.৫.১ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ফিল্ডার ইচ্ছা করে নিজের কথা, কাজ ও আচরণের দ্বারা ব্যাটসম্যানের সঙ্গে চাতুরী করলে তাতে আইনের লঙ্ঘন ঘটবে।’ এভাবে আইন ভাঙলে ৫ রান জরিমানা এবং ডেলিভারিটি পুনরায় করার নিয়ম রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত জিতেছে ১৭ রানে।

মাঠে কোনো শাস্তি পাওয়া থেকে বেঁচে গেলেও ম্যাচ শেষে বড় অঙ্কের জরিমানা গুণতে হয়েছে ডি কককে। তাকে ম্যাচ ফি’র ৭৫ শতাংশ জরিমানা করেছে আইসিসি। স্পোর্টসম্যানশিপ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাও পেয়েছেন আইসিসির শাস্তি। তাকে ম্যাচ ফি’র ২৫ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে।

ফখর অবশ্য ডি কককে কোনো দোষ দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘ভুলটা আমারই। হারিস রউফ ক্রিজে পৌঁছেছে কি না, সেটা দেখার চেষ্টা করছিলাম, কারণ সে একটু দেরিতে দৌড় শুরু করেছিল। বাকিটা ম্যাচ রেফারির সিদ্ধান্তের ওপর। তবে আমি মনে করি না এটা কুইন্টনের ভুল।’