মর্টারের শব্দে বান্দরবানের তমব্রু সীমান্তে আতঙ্ক
বিশেষ সংবাদদাতা :
বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি তমব্রু সীমান্তে মর্টার শেল ও ভারি অস্ত্রের বিকট শব্দে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আজ শুক্রবার বিকেলে পরপর দুইবার মর্টারের মতো ভারি অস্ত্রের বিকট শব্দে কেঁপে ওঠেছে তমব্রুর দক্ষিণ সীমান্ত।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সারাদিন কোনো গুলির শব্দ না শোনায় স্থানীয় লোকজন স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা এবং হাটে কেনা-বেচা করছিলেন। কিন্তু বিকাল পাঁচটার পরে হঠাৎ মর্টারের বিকট শব্দে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এরপর বিকেল পাঁচটা চল্লিশ মিনিটে মর্টার শেলের দ্বিতীয় বিকট শব্দটি শোনা যায়।
তমব্রু বাজারের মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, সারাদিন কোন গুলির শব্দ না শুনে দিনটা ভালো কেটেছিল। কিন্তু বিকালের পর দুটি বিকট শব্দ শুনে যেন মনে হয়েছে আমাদের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা শান্তিতে থাকতে পারব না।
তমব্রু পশ্চিম কুল জলপাইতলী এলাকার দিনমজুর জহির আহমেদ বলেন, আজকে সকাল থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনতে না পেয়ে কাজে বের হয়েছিলাম। কিন্তু শুক্রবার শেষ বিকেলে যেভাবে মর্টারের বিকট শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠেছে তাতে মনে হয়েছে আতঙ্ক সহসাই কাটছে না।
গত মঙ্গলবার বান্দরবান জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার তমব্রু সীমান্ত পরিদর্শনের পর সীমান্তের গোলাগুলির সময় লোকজন কে রাস্তাঘাট ও হাটবাজার থেকে বাড়ি ফিরিয়ে দিতে জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু গোলাগুলির এত বিকট শব্দের পরও কিছু লোকজন কে বাজারে ঘুরাঘুরি করতে দেখা যায়। এ ছাড়া মিয়ানমারের তমব্রু ও ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তে গোলাগুলি হলে এসব এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিয়ানমারের সীমান্তের ওপারে সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির সংঘর্ষে এতো গোলাগুলির পরও এখনো কোন পরিবার এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়নি।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমি নিজেও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। খারাপ অবস্থা দেখা দিলে সবাইকে নিয়ে আমি নিজ দায়িত্বে সবাইকে সরিয়ে নেবো।
এদিকে মিয়ানমারের গোলাগুলির বিকট শব্দে ঘুমধুম তমব্রু বাইশফাঁড়ি, চাকমা পাড়া, উত্তর পাড়া, কোনার পাড়া, তমব্রু পশ্চিম কুল এবং উখিয়ার আনজুমান পাড়া ও রহমতের বিল সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জোয়ানদের সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে।