১১ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৪৪ কোটি ডলার : অর্থমন্ত্রী
পোস্ট ডেস্ক :
চলতি অর্থ বছরের (২০২২-২৩) ১১ মাসে (জুলাই-মে) এক হাজার ৯৪৪ কোটি ২০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সরকারি দলের সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের লিখিত জবাবে তিনি আরো জানান, গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের রেমিট্যান্স এক দশমিক এক শতাংশ বেশি।
আজ রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। সরকার দলীয় সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণকারী শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৫৪২ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩ হাজার ৪৩৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২ হাজার ৭১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাজ্য ২ হাজার ৩৯ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, কুয়েত থেকে ১ হাজার ৬৮৯ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার, কাতার থেকে ১ হাজার ৩৪৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার, ইতালি থেকে ১ হাজার ৫৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়া থেকে ১ হাজার ২১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার, ওমান থেকে ৮৯৭ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, বাহরাইন থেকে ৫৬৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য মসিউর রহমান রাঁঙ্গার প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশের ওপর ও প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের ওপর আগে থেকেই উৎসে আয়কর ধার্য আছ। তবে এর ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ও প্রাইজবন্ড বিক্রি কমেনি। উৎসে আয়কর প্রত্যাহারের কোন পরিকল্পনা আপাতত নেই।
সরকারি দলের সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল জানান, বিগত অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
এর মধ্যে আমদানি ও রফতানি পর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ছিল ৯৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মুসক) থেকে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ছিল ৮৪ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং আয়কর ও ভ্রমণ কর পর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ছিল ৯৭ দশমিক ১৭ শতাংশ।
এই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরবর্তী সময়ে আমদানি পর্যায়ে কাঁচামালের মূল্য ও ফ্রেইট চার্জ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এতে কাস্টম ডিউটি বাড়লেও স্থানীয় পর্যায়ের রেয়াতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় রাজস্ব কমেছে।
ব্যাংকিং সেবাখাতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১ হাজার ৪৮২ কোটি কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। এছাড়াও সিগারেট খাতে ৭ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা ও মোবাইল ফোন খাতে ২ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা কম রাজস্ব আয় হয়েছে। কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্বব্যাপী সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও ব্যয় সংকোচন নীতি ইত্যাদি কারণে আমদানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় করের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সরকারি দলের সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, নতুন করদাতা শনাক্তকরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ লাখ ৬০ হাজার ৮১৭ জন। চলমান অর্থবছরে এ পর্যন্ত ৮ লাখ ২৭ হাজার ৩৪৬ জন করদাতা শনাক্তকরণ সম্ভব হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অংশ) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে (স্ট্যাম্প বিক্রয় নন-জুডিশিয়াল) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৩ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার ৯১ দশমিক ১৭ ভাগ অর্জিত হয়েছে।