বলিউড অভিনেত্রীসহ পুরো পরিবারকে হত্যা, বাবার মৃত্যুদণ্ড
পোস্ট ডেস্ক :
২০১১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন বলিউড অভিনেত্রী লায়লা খান ও তার পরিবারের পাঁচ সদস্য। প্রায় এক বছর পর ২০১২ সালের জুলাই মাসে ইগতপুরীতে অভিনেত্রীর ফার্ম হাউসের একটি গর্ত থেকে উদ্ধার হয় পচা-গলা মৃতদেহ। তাদের হত্যা করেছিলেন লায়লার সৎবাবা পারভেজ তাক। অবশেষে প্রায় ১৩ বছর পর এই হত্যাকাণ্ডের রায় দিয়েছেন মুম্বাইয়ের একটি আদালত।
হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হওয়া লায়লার সৎবাবা পারভেজ তাককে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশও দিয়েছেন আদালত। শুক্রবার (২৪ মে) মুম্বাইয়ের সেশন কোর্ট এ রায় দেন আদালত।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০১০ সালে আজমিনা, রেশমা ও জারা দুবাই গিয়েছিল এবং সেলিনার তৃতীয় স্বামী পারভেজ তাক পরিচিত এক আরব নাগরিকের সঙ্গে কাজ করতেন। তাক ও পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে, যখন তারা ভারতে ফিরে আসার পর তাদের উপার্জন তাকের সঙ্গে ভাগ করে নিতে অস্বীকার করেন।
পরে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুম্বাই থেকে নিখোঁজ হন লায়লা খান, তার বোন আজমিনা, যমজ ভাইবোন ইমরান-জারা, আরেক আত্মীয় রেশমা ও তার মা সেলিনা। পরে লায়লার বাবা (বায়োলজিক্যাল) নাদির শাহ প্যাটেল মুম্বাইয়ের ওশিওয়ারা থানায় মামলা করেন।
আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে, ক্রাইম ব্রাঞ্চ উল্লেখ করেছে, দুবাই ভ্রমণ থেকে প্রাপ্ত অর্থ ভাগ করতে অস্বীকার করায় তাক ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন এবং সেই থেকেই ছক কষে সৎ ছেলেমেয়ে এবং স্ত্রীকে ইগাতপুরী ফার্ম হাউজে হত্যা এবং তাদের সম্পত্তি দখলের ষড়যন্ত্র করেন।
পুলিশের ডায়রির এক ওয়ান্টেড অভিযুক্ত শাকির হুসেন ওয়ানিকে নিজের পরিকল্পনামাফিক ফার্ম হাউজে প্রহরী হিসেবে নিয়োগ করেন লায়লার সৎ বাবা। পরিবার নিয়ে খামারবাড়িতে পৌঁছানোর পর, সেলিনার সঙ্গে তাকের তর্ক হয়েছিল, যার পর তিনি তাকে একটি ভোঁতা বস্তু দিয়ে আঘাত করেছিলেন, যার ফলে তার মৃত্যু হয়েছিল। পরিবারের অন্য সদস্যরা সাহায্যের জন্য ছুটে এলে চৌকিদারের সাহায্যে ইমরানকে বেধড়ক মারধর করেন তাক। এরপর ছুরি ও রড দিয়ে পরিবারের বাকি পাঁচ সদস্যকে হত্যা করেন, সমস্ত দেহ ফার্ম হাউসেই পুঁতে দেন এবং প্রমাণ লোপাট করার জন্য বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।
ক্রাইম ব্রাঞ্চ পরবর্তীকালে ফার্ম হাউস থেকে ছয়টি কঙ্কাল উদ্ধার করে। লায়লা মীরা রোডের ফ্ল্যাটের পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়ে রেখেছিলেন মায়ের দ্বিতীয় স্বামী আসিফ শেখকে। অপর সৎবাবার সঙ্গে লায়লার সুসম্পর্ক সহ্য হয়নি তাকের।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে কন্নড় ভাষার ‘মেকআপ’ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি পর্দায় পা রাখেন লায়লা। ২০০৮ সালে ‘ওয়াফা: আ ডেডলি লাভ স্টোরি’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। সিনেমায় তার বিপরীতে অভিনয় করেন রাজেশ খান্না।