ষোল বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণের কাঁধের ওপর চেপে বসেছিল মহিলা ফেরাউন শেখ হাসিনা : রিজভী

Published: 16 September 2024

বিশেষ সংবাদদাতা :


ষোল বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণের কাঁধের ওপর চেপে বসেছিল মহিলা ফেরাউন শেখ হাসিনা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদরের চক আকাশতারা এলাকায় বগুড়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ৩ পরিবারের সদস্যদের মাঝে আমরা বিএনপি পরিবারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বগুড়ায় নিহত কমর উদ্দিন খান, শাকিল হোসেন ও জিল্লুর রহমানের পরিবারের হাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের পক্ষে এ অনুদান দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ষোল বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণের কাঁধের ওপর চেপে বসেছিল মহিলা ফেরাউন শেখ হাসিনা। তাকে সরানোর জন্য কচি শিশুরা কাঁধে স্কুল ব্যাগ নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন। পরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। আন্দোলনে শিশু ও ছাত্রদের মা পানির বোতল হাতে নিয়ে তার কোমলমতি শিশুকে সহযোগিতা করেছিলেন।

রিজভী বলেন, তারা যে অসীম সাহসিকতা দেখিয়েছিলেন সেটি শুধু ছিল বীরত্বের ইতিহাস। এ দেশ কখনও জালিমকে ক্ষমতায় রাখে না। সেটা শেখ হাসিনা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা ছিলেন একজন ভন্ড প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা শিশু বাচ্চার প্রাণ কেড়ে নিতে দ্বিধাবোধ করে না। শেখ হাসিনা বলছেন আমি দেশের কাছেই আছি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ মনে করছেন জল্লাদ কাছে আসছেন ফাঁসির দড়ি নিয়ে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে হাতে এখনও অবৈধ অস্ত্র । গণম্যধমে খবর এসেছে এখনও লাইসেন্স বাতিল হওয়া ১ হাজার ৮৮৮টি অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এগুলো এখনও ব্যবহার করা হচ্ছে। গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এ অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যান্য জেলায়ও এ অস্ত্র ব্যবহারের খবর পাচ্ছি। কেন এ অস্ত্র এখনও উদ্ধার করতে পারেনি, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সে প্রশ্ন রাখেন তিনি।

রিজভী বলেন, গণভবন থেকে এসএসএফের অনেক আধুনিক অস্ত্র খোয়া গেছে। এগুলো উদ্ধার করতে না পারলে জনগণ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের লোকেরা লাখ লাখ কোটি কালো টাকা নিয়ে বসে আছে। দেশের নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যমে এসেছে বিগত ১৫ বছরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার ১৮.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এর মধ্যে ১৭.৬০ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। তাহলে উন্নয়নটা হলো কোথায়? বাকি টাকা আছে আওয়ামী লীগের নেতাদের হাতে, যুবলীগ-ছাত্রলীগের হাতে, তাদের ব্যবসায়ীদের হাতে। এ টাকা সন্ত্রাসের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, যা আমরা দেখলাম গোপালগঞ্জে।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, কয়েকদিন আগে শুনলাম শেখ হাসিনা সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান করছেন। তিনি দেশে আসার প্রস্ততি নিচ্ছেন । আর খবর পেয়ে তার সন্ত্রাসী বাহিনী আবারও রক্তাক্ত পথ বেছে নিয়েছে, যা আমরা গোপালগঞ্জে দেখতে পেয়েছি। শেখ হাসিনা যদি দেশে ফিরেন, তাহলে আরও শিশুর রক্ত ঝড়বে, আরও গণহত্যা হবে। আর তার প্রভুরাতো বসে আছেন বাংলাদেশে অন্তর্ঘাত সৃষ্টির জন্য।

আমরা বিএনপি পরিবার এর আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র কোষাধ্যক্ষ ও আমরা বিএনপি পরিবার এর উপদেষ্টা এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, আমরা বিএনপি পরিবার-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আহসানুল হক তৈয়ব জাকির, সাংগঠনিক সম্পাদক সহিদ উন নবী সালাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে শহীদ রিক্সা চালক কমরউদ্দিন, শহীদ ছাত্র শাকিল হাসান মানিক ও গাবতলী পৌর শ্রমিকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শহীদ মজিল্লুর রহমানের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।