চীনে তৈরি হবে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ

Published: 27 December 2024

পোস্ট ডেস্ক :


চীন এবার তিব্বতে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে, যা তিব্বতের স্থানীয় জনগণের স্থানচ্যুতি এবং ভারত ও বাংলাদেশের পরিবেশে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে বলে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এই বাঁধটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্লান্ট থ্রি গর্জেস বাঁধের তিন গুণ বেশি শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম, তা যে ‘যারলুং সাংপো’ নদীর নিম্নাংশে নির্মিত হবে, চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

 

 

চীন বলছে, এটি একটি নিরাপদ প্রকল্প যা পরিবেশের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেবে এবং স্থানীয় সমৃদ্ধি বাড়ানোর পাশাপাশি বেইজিংয়ের জলবায়ু নিরপেক্ষতার লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করবে। তবে মানবাধিকার সংস্থা এবং বিশেষজ্ঞরা প্রকল্পটির ফলস্বরূপ স্থানচ্যুতি এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

 

 

এই জলবিদ্যুৎ বাঁধ প্রকল্প প্রথম ২০২০ সালে ঘোষণা করা হয়েছিল এবং এখন এটি বাস্তবায়নের পথে। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রকল্পের জন্য অন্তত চারটি ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ খনন করতে হবে, যা নদীর প্রবাহ পরিবর্তন করবে। প্রকল্পটি কতজন মানুষকে স্থানান্তরিত করবে, সে বিষয়ে চীনা কর্তৃপক্ষ কোনো তথ্য প্রদান করেনি, যদিও থ্রি গর্জেস বাঁধের জন্য ১৪ লাখ মানুষকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।

 

এদিকে, বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই বাঁধ চীনকে ভারত ও বাংলাদেশের ওপর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেবে, যা ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ২০১৩ সালের একটি প্রতিবেদন বলেছে, “এই নদীগুলোর নিয়ন্ত্রণ চীনকে ভারতের অর্থনীতির ওপর একরকম শ্বাসরোধী ক্ষমতা দেবে”।

 

বিশ্বের গভীরতম ক্যানিয়নের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত এই নদীটির ওপর চীন একাধিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করেছে এবং এই বাঁধটি তার সবচেয়ে বড় এবং উচ্চাভিলাষী প্রকল্প হবে।প্রকল্পটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে, যা প্রকল্পের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

 

প্রকল্পটির সম্ভাব্য খরচ প্রায় এক ট্রিলিয়ন ইউয়ান (১২৭ বিলিয়ন ডলার) হতে পারে।এটি চীনের বৃহত্তম প্রকল্প হতে চলেছে এবং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।