স্পেনগামী সমুদ্রপথে ২০২৪ সালে অভিবাসীদের রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু
পোস্ট ডেস্ক :
চলতি ২০২৪ সালে স্পেনগামী সমুদ্রে বিপজ্জনক যাত্রায় রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছেন।মানবাধিকার সংগঠন Caminando Fronteras বা ওয়াকিং বর্ডার্স নামে একটি সংগঠন জানিয়েছে,বছরের শুরু থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তত ১০,৪৫৭ অভিবাসীর মৃত্যু বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এটি গত বছরের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি এবং ২০০৭ সালে হিসাব রাখা শুরু হওয়ার পর সর্বোচ্চ।
সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে, যেখানে ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল দিনে প্রায় ১৮ জন। নিহতদের মধ্যে ১,৫৩৮ শিশু এবং ৪২১ জন নারী রয়েছেন। দুর্বল নৌকা, বিপজ্জনক পথ এবং সামুদ্রিক উদ্ধার ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে এই প্রাণহানি হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্যামিনানডো ফ্রন্টিয়ারস( Caminando Fronteras) তাদের তথ্য সংগ্রহ করেছে অভিবাসী পরিবারের সাথে যোগাযোগ , বিপদগ্রস্ত নৌযানের হটলাইন এবং সরকারি উদ্ধার পরিসংখ্যান থেকে। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা হেলেনা মালেনো বলেছেন, “১০,৪০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যু বা নিখোঁজ হওয়া উদ্ধার ও সুরক্ষা ব্যবস্থার এক গভীর ব্যর্থতার প্রমাণ। এটি একটি অগ্রহণযোগ্য মানবিক বিপর্যয়।”
বেশিরভাগ মৃত্যুই ঘটেছে আটলান্টিক রুটে, যেখানে আফ্রিকা থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে যাওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। এই রুটটি শক্তিশালী স্রোতের কারণে অভিবাসীদের জন্য মারাত্মক হয়ে উঠেছে। ক্রিসমাসের দিনও সাতটি অভিবাসী নৌকা ক্যানারি দ্বীপে পৌঁছায়।
স্পেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬০,২১৬ জন অভিবাসী অনিয়মিত পথে স্পেনে প্রবেশ করেছেন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪.৫ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি ক্যানারি দ্বীপে পৌঁছেছেন।
সমুদ্রপথে অভিবাসনের ঝুঁকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এই বিপজ্জনক যাত্রা বন্ধ করতে এবং আরও কার্যকর উদ্ধার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও মানবিক উদ্যোগ প্রয়োজন। মানুষের জীবন রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা জরুরি।