লিবিয়ায় নিহত ২৩ জনের ১০ জনই মাদারীপুরের

Published: 4 February 2025

পোস্ট ডেস্ক :

মাদারীপুরের রাজৈরে ঘরে ঘরে চলছে শোকের মাতম। অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় নৌকাডুবিতে নিহত ২৩ জনের মধ্যে ১০ জনের পরিচয় মিলেছে। তাদের বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। এ ঘটনায় জড়িত দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ বলছে, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিহতদের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, দালালদের খপ্পড়ে পড়ে গত পহেলা জানুয়ারি ইতালির উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়ে মাদারীপুরের রাজৈর পৌরসভার পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের চা বিক্রেতা হাসান হাওলাদারের ছেলে টিটু হাওলাদার। তার সঙ্গে মামা গোবিন্দপুরের বাসিন্দা আবুল বাশার আকনও যোগ দেন। ২৪শে জানুয়ারি লিবিয়া থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যাত্রা করেন তারা। মাঝপথে ভূ-মধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারান মামা আবুল বাশার ও তার ভাগ্নে টিটু। সোমবার সকালে মৃত্যুর খবর এলে পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। নিহতদের মধ্যে রয়েছে রাজৈর উপজেলার গোবিন্দপুরের ইনসান শেখ, শাখারপাড়ের সজিব মোল্লা, সাদবাড়িয়ার রাজীব, সুন্দিকুড়ির সাগর বিশ্বাস, আশিষ কীর্তনীয়া, সাগর বাড়ৈ ও বৌলগ্রামের অনুপ সরদার।

এই ঘটনায় ১০ জনের লাশ উদ্ধার করে লিবিয়া কোস্ট গার্ড। ভিটেমাটি বিক্রি করার পাশাপাশি চড়াসুদে টাকা এনে দালালদের হাতে লাখ লাখ টাকা তুলে দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। এই ঘটনায় মূলহোতা রাজৈর হরিদাসদি গ্রামের স্বপন মাতুব্বর, মজুমদারকান্দি গ্রামের মনির হাওলাদার ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলীপুরের রফিক দালাল। এই ঘটনায় জড়িত দালালদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পাশাপাশি নিহতের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

নিহত টিটু হাওলাদারের বাবা হাসান হাওলাদার বলেন, আমি সামান্য চা দোকানি। আমাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আমার ছেলেকে ইতালি নেয়ার জন্য টাকা নেয়। এখন শুনি ছেলে মারা গেছে। আমি দালালের বিচার চাই।

নিহত আবুল বাসার আকনের ভাই বাচ্চু আকন বলেন, দালালকে টাকা দিয়ে আমরা সর্বস্বান্ত। এখন আমার ভাইয়ের লাশ চাই।

রাজৈর থানার ওসি মাসুদ খান বলেন, দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিহতদের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে দূতাবাসের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেয়া হবে।