গাজায় যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহুকে মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মিদের চিঠি
পোস্ট ডেস্ক :
গাজায় নতুন সামরিক অভিযান বন্ধ করে হামাসের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন হামাসের বন্দিদশা থেকে বেঁচে ফেরা ৪০ জন এবং গাজায় জিম্মিদের পরিবারের ২৫০ সদস্য। শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের প্রতি লেখা এক চিঠিতে এই আহ্বান জানিয়েছেন তারা। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘এই চিঠিটি রক্ত ও অশ্রু দিয়ে লেখা।
এটি আমাদের সেসব বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সদস্যরা লিখেছেন যাদের প্রিয়জনদের বন্দিদশায় হত্যা করা হয়েছে এবং যারা চিৎকার করছে, ‘‘যুদ্ধ বন্ধ করুন’’। আলোচনার টেবিলে ফিরে আসুন এবং একটি চুক্তি সম্পূর্ণ করুন যা যুদ্ধ শেষ করার মূল্যে সমস্ত জিম্মিদের ফিরিয়ে দেবে। সামরিক চাপ তাদের বিপদে ফেলছে। সমস্ত জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার চেয়ে জরুরি আর কিছুই নেই।
’
এতে আরো লেখা হয়েছে, ‘আমরা সকলেই (যুদ্ধ বন্ধ) সমর্থন করি। যারা বন্দিদশা থেকে ফিরে এসেছে তারা ভয়াবহতা সহ্য করেছে, যারা এখনো গাজায় জিম্মি তাদের পরিবার আতঙ্কে অস্থির হয়ে আছে, যারা তাদের প্রিয়জনদের আলিঙ্গন করতে পেরেছেন এবং যারা তাদের প্রিয়জনকে দাফন করতে বাধ্য হয়েছেন, তারা ভাবতেন যে তারা বেঁচে ফিরতে পারতেন।’
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধে জীবিত জিম্মিদের হত্যা করা হয় এবং মৃতদের নিখোঁজ করা হয়। এটি কোনও স্লোগান নয়, এটি বাস্তবতা।
৪১ জন জিম্মি তাদের জীবন দিয়ে মূল্য দিয়েছেন, আমরা, তাদের পরিবারের সদস্যরা, মূল্য দিয়েছি। তারা ফিরে আসতে পারত, কিন্তু তারা ফিরে আসবে না। ’
জিম্মিদের বাঁচানো বা ফিরিয়ে না এনে অন্তহীন যুদ্ধ বেছে নেওয়ার জন্য এবং তাদের বলিদান দেওয়ার জন্য সরকারের সমালোচনাও করা হয়েছে চিঠিতে। বলা হয়েছে, ‘এটি একটি অপরাধমূলক নীতি – আপনার ৫৯ জন জিম্মিকে বলি দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। ’
৭ অক্টোবরের হামাস আক্রমণের শিকার হিসেবে স্বাক্ষরকারীরা লিখেছেন, তারা ‘লাল পতাকা উত্তোলন করছেন এবং সতর্ক করছেন: যুদ্ধে ফিরে গেলে আরো জিম্মিদের জীবন শেষ হবে এবং আরো ঝুঁকি বাড়বে।
’ এ সময় তারা ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর পাইলটের কথা উল্লেখ করেন যিনি ১৯৮৬ সালে লেবাননে অভিযানের সময় নিখোঁজ হয়েছিলেন এবং যার খোঁজ এখনো মেলেনি।
চিঠিটি যুদ্ধ বন্ধ করে অবিলম্বে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে শেষ করা হয়েছে। এতে লেখা হয়েছে, ‘যুদ্ধ সমাপ্তি ও আগামীদিনের সমাধান খুঁজে বের করার বিনিময়েই সব জিম্মিদের মুক্তি। যদি আপনি তা না করেন, তাহলে পরবর্তী জিম্মির রক্ত (মৃত্যু) এবং সমস্ত জিম্মির ভাগ্য আপনার হাতে থাকবে।’