ইসলামাবাদে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোকদিবস পালিত
পাকিস্তানের ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস পালন করে। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। হাইকমিশন প্রাঙ্গনে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে প্রবাসী বাংলাদেশি, স্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন।
শনিবার (১৫ আগস্ট) সকালে চান্সারি প্রাঙ্গণে হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ইসলামাবাদে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকগণের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক আহসান।
বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে চান্সারি প্রাঙ্গণে পবিত্র কোরআন খতম ও দোয়া করা হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষে সন্ধ্যায় এক আলোচনা ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হাইকমিশনার ও হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর, দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং ইউনেস্কোর মহাপরিচালক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তুলনাহীন অবদান এবং জীবন ও কর্মের উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরেন। তাঁরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেন।
হাইকমিশনার তারিক আহসান তাঁর বক্তব্যে শোকাবহ এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সাথে সকল শাহাদাতবরণকারীর আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে ঘাতকেরা শুধু ব্যক্তি মুজিব-কে হত্যা করেনি। তারা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিশ্চিহ্ন করতে। তাই, সংবিধান থেকে সমতা, অসাম্প্রদায়িতকা আর বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ সংক্রান্ত ধারাগুলো মুছে ফেলা হয়। এই হত্যাকান্ডের কোন বিচার করা যাবেনা এমন ধারা সন্নিবেশিত করে সংবিধানকে কলুষিত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর নির্বাসিত বঙ্গবন্ধুর নাম ফিরে আসে বাংলার ঘরে ঘরে। এরপর প্রতিশোধের পরিবর্তে একটি সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের শাস্তি নিশ্চিতের মাধ্যমে একটি অন্ধকার অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হয়। সবশেষে, বঙ্গবন্ধুর জীবনিভিত্তিক একটি প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।