পুনঃপ্রতিষ্ঠিত বুখারেস্ট মিশনে প্রথমবারের মতো জাতীয় শোকদিবস পালন
রোমানিয়ার বুখারেস্টে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রথমবারের মতো যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোকদিবস পালন করা হয়েছে। শনিবার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ। বিকালের কর্মসূচিতে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন, এক মিনিট নীরবতা পালন, বাণীপাঠ, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন, আলোচনাসভা এবং ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুসহ সকল শাহাদত বরণকারীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা, দেশের উন্নয়ন ও মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে বুখারেস্টে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী দূতাবাসের কর্মকর্তা, পরিবারবর্গ, প্রবাসী বাংলাদেশি ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিদেশিদের নিয়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অতঃপর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্তৃক এ শোকদিবস উপলক্ষে প্রদেয় প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রবাসী বাঙালিগণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং তাঁর সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনের উল্লেখযোগ্য দিকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে এ দিনের ঘটনা পরম্পরা এবং বাঙালি জাতির জীবনে এ বিয়োগান্তক ঘটনার সুদূর প্রসারী নেতিবাচক প্রভাবের দিক তুলে ধরে বলেন- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং সে অনুযায়ী কাজ শুরু করেন। কিন্তু কতিপয় কুচক্রীদের দ্বারা বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের এ দিনে হত্যার ফলে দেশের উন্নয়ন কর্মকা- মুখ থুবড়ে পড়ে। তবে দীর্ঘদিন পরে হলেও সেসকল খুনির বিচার করা সম্ভব হয়েছে।
কয়েকজনকে ফাঁসির মধ্য দিয়ে বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে। তবে এখনো যারা বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিচারের রায় কার্যকর করার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, তাঁর সমগ্র সত্তা জুড়ে ছিল বাংলা ও বাংলাদেশ। তাঁর নির্মম হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়লেও প্রধানমন্ত্রী তার জীবনের সবচেয়ে বড় এই শোককে শক্তিতে পরিণত করে দেশকে উন্নয়নের অনন্য মাত্রায় অধিষ্ঠিত করেছেন। রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের শেষার্ধে বঙ্গবন্ধু, তাঁর সহধর্মিণী ও পরিবারের সকল সদস্য সহ ১৫ই আগস্টে শাহাদতবরণকারী সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ৬ই আগস্ট ২০২০ থেকে তার কার্যক্রম শুরু করেছেন। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে বুখারেস্টে দূতাবাস স্থাপন করলেও ১৯৯৫ সালে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। রোমানিয়া সরকারও তাদের ঢাকাস্থ দূতাবাস ২০০০ সালে বন্ধ করে দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে জুলাই ২০২০ হতে বাংলাদেশ বুখারেস্টে দূতাবাস পুঃস্থাপনের মাধ্যমে তার নবযাত্রা শুরু করেছে।