রয়টার্সের জরিপে ১০ পয়েন্ট এগিয়ে জো বাইডেন

Published: 5 October 2020

পোস্ট ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক মাসেরও কম সময় বাকি। এ সময়ে জনমত জরিপে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে শতকরা ১০ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী জো বাইডেন। অন্যদিকে বেশির ভাগ মার্কিনি মনে করছেন, করোনা ভাইরাসকে গুরুত্ব দিয়ে দেখলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সংক্রমণ এড়াতে পারতেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স/ইপসোস-এর জনমত জরিপে এসব কথা বলা হয়েছে। রোববার ওই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। জরিপে দেখা গেছে, জো বাইডেনকে সমর্থন করছেন শতকরা ৫১ ভাগ মানুষ। অন্যদিকে ট্রাম্পকে সমর্থন করছেন ৪১ ভাগ। শতকরা ৪ ভাগ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ বলেছেন, তারা তৃতীয় কোনো দলের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।

এ ছাড়া আরও ৪ ভাগ বলেছেন তারা এখনও সিদ্ধান্ত নেননি কাকে ভোট দেবেন। গত ২ ও ৩রা অক্টোবর এই জরিপ চালানো হয়। জরিপ পরিচালিত হয় পুরো যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইনে। এতে ১০০৫ জন প্রাপ্ত বয়স্ক মার্কিনি সাড়া দেন। এর মধ্যে ৫৯৬ জন ভোটার।

বর্তমানে ওয়াশিংটনের ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিকেল সেন্টারে করোনার চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বার বারই এই ভাইরাসের ভয়াবহতাকে উপেক্ষা করেছেন। উল্টো মুখে মাস্ক পরার কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনকে গত সপ্তাহে প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে উপহাস করেছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে কমপক্ষে ২ লাখ ৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন বেশুমার। বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দিতে হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্কুল কলেজ। রিপোর্টে রয়টার্স বলেছে, জাতীয় পর্যায়ে পপুলার ভোট আগেভাগে নিশ্চিত করে একটি সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন জো বাইডেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে শুধু ভোটারের ভোটই বা পপুলার ভোটই কাজে দেবে না। বেশির ভাগ রাজ্যে একজন প্রার্থীকে জিততে হবে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। কিন্তু এই ইলেকটোরাল ভোটে যেসব রাজ্য থেকে প্রেসিডেন্ট নির্ধারিত হন সেইসব রাজ্যকে বলা হয় ব্যাটলগ্রাউন্ড বা ভোটের যুদ্ধক্ষেত্র। এসব রাজ্যে জনমত জরিপে দেখা গেছে ট্রাম্প এবং জো বাইডেন দু’জনেই প্রায় সমান জনপ্রিয়। ফলে কার ভাগ্যে হোয়াইট হাউজের চাবি ওঠে তা নিশ্চিত করে বলা খুব কঠিন।

এর মধ্যে শুক্রবার ৭৪ বছর বয়সী ট্রাম্পকে ভর্তি করা হয়েছে ওয়াল্টার রিড হাসপাতালে। এর কয়েক ঘন্টা আগে তিনি নিজে টুইট করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান। হাসপাতালে নেয়ার আগে তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। এ অবস্থায় তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এমন অন্য রিপাবলিকান নেতারাও পরীক্ষা করিয়েছেন এবং ঘোষণা দিয়েছেন তারাও করোনায় আক্রান্ত। করোনা ভাইরাস নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ মানুষ এখনও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। জনমত জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ৬৫ ভাগ মার্কিন নাগরিক এ বিষয়ে একমত যে, যদি ট্রাম্প করোনা ভাইরাসকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতেন তাহলে হয়তো তিনি সংক্রমণ রোধ করতে পারতেন। এমনটা মনে করেন ডেমোক্রেটদের মধ্যে শতকরা ১০ জনের মধ্যে ৯ জন।

রিপাবলিকান ভোটারদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৫ জন। আবার শতকরা মাত্র ৩৪ ভাগ মানুষ মনে করেন, করোনা ভাইরাস ইস্যুতে সত্য কথা বলেছেন ট্রাম্প। শতকরা ৫৫ ভাগ মনে করেন ট্রাম্প সত্য বলেননি। শতকরা ১১ ভাগ বলেছেন, তারা নিশ্চিত নন।
জরিপে অংশ নেয়া শতকরা ৫৭ ভাগ মার্কিনি বলেছেন, করোনা ভাইরাস মহামারি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তাকে অনুমোদন করেন না তারা। শতকরা এই হার গত সপ্তাহের চেয়ে প্রায় ৩ ভাগ বেশি। অন্যদিকে শতকরা ৬৭ ভাগ মার্কিনি মনে করেন, ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ করা উচিত। আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক স্থগিত রাখার পক্ষে শতকরা ৫৯ ভাগ মার্কিনি।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটা অস্পষ্ট যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অসুস্থতা আগামী প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে কি প্রভাব ফেলবে, যা আগামী ১৫ই অক্টোবর হওয়ার শিডিউল রয়েছে। অন্যদিকে আগামী বুধবার ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের দুই প্রার্থী ডেমোক্রেট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান মাইক পেন্সের মধ্যে বিতর্ক হওয়ার কথা রয়েছে। তাদের মধ্যে এই একটি বিতর্কই হবে।