চিকিৎসায় নোবেল পেলেন তিন বিজ্ঞানী
পোস্ট ডেস্ক : এ বছর চিকিৎসায় যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দুই মার্কিন ও এক বৃটিশ বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী। হেপাটাইটিস সি ভাইরাস শনাক্তকরণে জন্য তাদেরকে এই পুরষ্কার দেয়া হয়েছে। তারা হলেন হার্ভে জে. অলটার, মাইকেল হাফটন ও চার্লস এম রাইস। নোবেল কমিটির ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সোমবার পুরষ্কারদাতা সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটে নোবেল অ্যাসেম্বলি এ ঘোষণা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, হেপাটাইটিস সি ভাইরাস লিভার সিরোসিস ও ক্যান্সারের জন্য দায়ী। তাদের এই কাজের আগে হেপাটাইটিস এ এবং বি ভাইরাসকে শনাক্ত করা ছিল গুরুত্বপূর্ণ কাজ। হেপাটাইটিস সি ভাইরাস শনাক্ত করা বা আবিষ্কার করার ফলে হেপাটাইটিসের বাকি জটিল বিষয়গুলো জানা গেছে।
এর ফলে রক্ত পরীক্ষা করা এবং নতুন ওষুধ আবিষ্কারের মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করা গেছে। বিজয়ী বিজ্ঞানীরা পুরষ্কারের এক কোটি সুইডিস ক্রোনা বা ১১ লাখ ডলার সমানভাবে ভাগ করে নেবেন।
নোবেল কমিটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রক্তবাহিত হেপাটাইটিসের বিরুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ওই তিন বিজ্ঞানীকে এবার চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। হেপাটাইটিস বিশ্বজুড়ে একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। এর ফলে বিশ্বে বিপুল সংখ্যক মানুষ সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। কিন্তু এই বিজ্ঞানীরা এই রোগ সৃষ্টির এজেন্টকে শনাক্ত করেছেন। ১৯৬০ এর দশকে বারুচ ব্লুমবার্গ নিশ্চিত করেন যে, রক্তবাহিত এক ধরনের হেপাটাইটিসের জন্য দায়ী একটি ভাইরাস। একে তিনি হেপাটাইটিস বি ভাইরাস হিসেবে শনাক্ত করেন। এর ফলে ওই ভাইরাসকে শনাক্ত করতে পরীক্ষা পদ্ধতি এবং একটি কার্যকর টিকা আবিষ্কার হয়। এ জন্য তার অবদানের জন্য ১৯৭৬ সালে চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার দেয়া হয় ব্লুমবার্গকে। ওই সময় ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথে রোগীদের মধ্যে, যারা ব্লাড ট্রান্সফিউশন গ্রহণ করেছেন, তাদের ওপর হেপাটাইটিসের আবির্ভাব নিয়ে গবেষণা করছিলেন হার্ভে জে. অলটার। যদিও রক্তের পরীক্ষায় হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সংক্রমণ কমেছে, কিন্তু হার্ভে জে. অলটার এবং তার সহকর্মীরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করলেন যে, বিপুল সংখ্যক এমন রোগীর রোগ অনির্ণেয় রয়ে গেছে। এ সময়ে হেপাটাইটিস এ ভাইরাস সংক্রমণের পরীক্ষাও বেরিয়ে গেল। হার্ভে জে. অলটার দেখলেন, যেসব রোগ অনির্ণেয় রয়ে গেছে, সেটা হেপাটাইটিস-এও না। এসব রোগীর মধ্যে অজ্ঞাত সংক্রমণ দেখা দিয়েছে একটি এজেন্টের কারণে। ফলে তিনি ও তার সহকর্মীরা মিলে এসব হেপাটাইটিসের রোগীদের রক্ত নিয়ে পরীক্ষা করতে লাগলেন। তাদের পরীক্ষায় বেরিয়ে এলো হেপাটাইটিস- সি ভাইরাস।