কিশোরীকে আটকে রেখে দেড় মাস ধরে ধর্ষণ

Published: 16 October 2020

বিশেষ সংবাদদাতা : অপহরণের পর দীর্ঘ দেড় মাস আটকে রেখে ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছে র‍্যাব।

সেই সঙ্গে শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে ধর্ষকসহ ৪ জনকে। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-৭ ও ১৫ এর পক্ষ থেকে। আটককৃতদের কক্সবাজার সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। কিশোরীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার মডেল থানার ডিউটি অফিসার মো, রায়হান।

আটককৃতরা হলেন- কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়া চেয়ারম্যানপাড়ার আবদুল গনির ছেলে ধর্ষক শাহাবউদ্দীন, সহযোগী পেকুয়া উজানটিয়ার আরমান হোসেন, খরস্কুল হাটখোলাপাড়ার নুরুল আলম ও পেঁচারঘোনার লোকমান।

কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীর জুমছডির টমটম চালকের কিশোরী কন্যাকে দেড় মাস যাবৎ আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়ার পর গত ১১ অক্টোবর ৯৯৯ কল করে সহায়তা চান ভিকটিমদের মা। ৩৫ হাজার টাকা ধার দেওয়ার পর যথাসময়ে ফেরত না পাওয়ায় টাকার পরিবর্তে টমটম চালকের মেয়েকে জোরপূর্বক আটকে রেখে ধর্ষণ, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ করেন অসহায় কিশোরীর মা। কক্সবাজার মডেল থানার পুলিশ সেদিন দুপুরে কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে র‍্যাব ভিকটিমকে উদ্ধারে মাঠে নামে।

ভিকটিমের মা জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী পশ্চিম জুমছড়ির টমটম চালক মাহবুব আলমের সঙ্গে খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়ার আব্দুল গনির ছেলে শাহাবুদ্দিনের টমটম চালাতে গিয়ে সম্পর্ক হয়। সেই সুবাদে শাহাবুদ্দিন মাহবুব আলমের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করত। ইত্যবসরে মাহবুব আলমের টাকার প্রয়োজন পড়ায় টমটম চালক শাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ধার নেয়।

টানাপোড়নের সংসারের মাহবুব আলম ৩৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। এই সুযোগে শাহাবুদ্দিন ইজিবাইক (টমটম) চালক মাহবুব আলমের কিশোরী কন্যাকে জোরপূর্বক লোকজন নিয়ে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। উক্ত টমটম চালক শাহাবুদ্দিন টাকা ফেরত না দিলে মেয়েকে আর ফেরত দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। মাহবুব আলমের স্ত্রী শামসুন্নাহার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য স্থানীয় মেম্বার ও খরুলিয়ার মেম্বার আবদুর রশীদের কাছে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করে। তাতেও মেয়েকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
মেয়েকে উদ্ধারের জন্য সরকারি সহায়তা নম্বর ৯৯৯ ফোন করে মেয়েকে উদ্ধারের আকুতি জানায় মা শামসুন্নাহার। বিষয়টি কক্সবাজার মডেল থানাকে অবগত করা হলে কক্সবাজার মডেল থানার এস আই মনসুরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়ায় টমটম চালক শাহাবুদ্দিনের বাড়িতে কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য ১১ অক্টোবর অভিযান চালায়। অভিযানের খবর আগে থেকে জেনে যাওয়ায় শাহাবুদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন উক্ত মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়।

খরুলিয়ার মেম্বার আব্দুর রশিদ জানান, টমটম চালক শাহাবুদ্দিন ইতিপূর্বেও নারী সংক্রান্ত ঘটনা করেছে।

কিশোরীর মা শামসুন্নাহার টমটম চালক ধর্ষক শাহাবুদ্দিন ও সহযোগীদের আটক করায় র‍্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘ধর্ষকের হাত থেকে মেয়েকে উদ্ধার করতে পারায় আমি র‍্যাবকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কিশোরীর মা ধর্ষক শাহাবুদ্দিনের কঠিন শাস্তি দাবি করেন।