যুক্তরাষ্ট্রে ভোটবঞ্চিত ৫২ লাখ মার্কিনি

Published: 17 October 2020

পোস্ট ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না দেশটির প্রায় ৫২ লাখ নাগরিক।

বর্তমান ও আগের ক্রিমিনাল রেকর্ড তথা অপরাধ খতিয়ানের কারণে নভেম্বরের নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে এ বিশাল সংখ্যক ভোটার।

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না দেশটির প্রায় ৫২ লাখ নাগরিক। বর্তমান ও আগের ক্রিমিনাল রেকর্ড তথা অপরাধ খতিয়ানের কারণে নভেম্বরের নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে এ বিশাল সংখ্যক ভোটার।

অস্বাভাবিকভাবে শ্বেতাঙ্গ নাগরিকদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকরাই বেশি বঞ্চিত। তবে ২০১৬ সালে ভোট দিতে না পারা ব্যক্তিদের সংখ্যা আরও বেশি ছিল।

দেশজুড়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ভোটাধিকার সুরক্ষার উদ্যোগের ফলে গতবারের চেয়ে এবার এ সংখ্যা অন্তত ১৫ শতাংশ কমেছে।

আইন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘সেনটেন্সিং প্রজেক্ট’র নতুন এক রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। এবার প্রাপ্তবয়স্ক প্রায় ১৬ কোটি মানুষ ভোট দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। গতবার (২০১৬ সালে) এ সংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ৭৫ লাখ।

আগাম ভোটের ফলে এক কোটি ৭০ লাখ মার্কিনি ইতোমধ্যে ভোট দিয়েছেন। প্রাপ্তবয়স্কদের সবাই যাতে ভোট দিতে পারেন এজন্য নতুন ভোটার নিবন্ধন চালু রয়েছে। যা চলবে সোমবার (১৯ অক্টোবর) পর্যন্ত। ফোর্বস ও ভক্স।

এদিকে ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে বদ্ধপরিকর বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা। তহবিল সংগ্রহেও রিপাবলিকানদের পেছনে ফেলল তারা। দলটির তহবিলবিষয়ক সংগঠন এক্টব্লু বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের সংগৃহীত তহবিলের পরিমাণ ১৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।

সেপ্টেম্বরে জো বাইডেনের প্রচারণা টিম সংগ্রহ করেছে ৩৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার। তিন মাসে যে পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ হয়েছে, তা এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

বিপরীতে রিপাবলিকানদের তহবিল সংগ্রহের প্ল্যাটফর্ম উইনরেড বলেছে, একই সময়ে তারা সংগ্রহ করতে পেরেছে মাত্র ৬২ কোটি ৩৫ লাখ ডলার।

যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধী ও সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ভোট প্রদানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অপরাধ ও বন্দি সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এ সংখ্যা প্রতিবারই বেড়েছে। ১৯৭৬ সালের পর থেকে ক্রিমিনাল রেকর্ড থাকা মার্কিনির সংখ্যা অন্তত চারগুণ হয়েছে।

তবে অধিকার সংস্থাগুলোর দাবির প্রেক্ষিত্রে সম্প্রতি বিচারিক ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে বাধ্য হয়েছে। অনেক রাজ্যেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ভোটদানের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে।

সর্বশেষ ২০১৮ সালে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ফ্লোরিডা; যার ফলে ভোটাধিকার ফিরে পায় অন্তত ১০ লাখ মানুষ। এর পরও বিশালসংখ্যক মানুষ এখনও বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের দেশে ভোট প্রক্রিয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে নির্বাচনের মাত্র তিন সপ্তাহেরও কম সময় আগে বুধবার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে আইনি পরামর্শ প্রতিষ্ঠান সেনটেন্সিং প্রজেক্ট। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০১৬ সালের চেয়ে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। গতবার প্রায় ৬১ লাখ নাগরিক ভোট দিতে পারেনি।

সেই সংখ্যা থেকে ১৫ শতাংশ কমে এবার তা দাঁড়িয়েছে ৫২ লাখে। এটা মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ২ শতাংশ। কিন্তু বঞ্চিত এ ভোটারদের মধ্যে কৃষ্ণাঙ্গদের সংখ্যাই বেশি। রিপোর্ট মতে, দেশজুড়ে প্রায় ৬.২ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গকে (শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে এ সংখ্যা তিনগুণ) ভোট দেয়া থেকে বিরত রাখা হচ্ছে।

ভোটবঞ্চিত এসব মার্কিনির বেশির ভাগই এখন আর কারাগারে বন্দি নয়। মাত্র ২৫ শতাংশ কারাগারে রয়েছে। ১০ শতাংশ প্যারোলে আর মাত্র ২২ শতাংশ প্রবেশনে রয়েছে। অন্যদিকে ৪৩ শতাংশই তাদের সাজার মেয়াদ শেষ করেছে। কিন্তু এর পরও তারা এবার ভোট দিতে পারবে না।

ভোটাধিকার নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে রাজ্য থেকে রাজ্যে পার্থক্য রয়েছে। মেইন ও ভারমন্টে কারাগারে থেকেও ভোট দিতে পারে মানুষ। ম্যাসাচুসেটসে মাত্র ০.২ শতাংশ বন্দিকে ভোটদানে বিরত রাখা হয়। আলাবামা, মিসিসিপি ও টেনেসিতে প্রাপ্তবয়স্ক প্রায় ৮ শতাংশ বন্দিকেই ভোটবঞ্চিত রাখা হয়।

অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে চাপে ফেলে আলোচনায় সঞ্চালক সাভানাহ : প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে এনবিসির এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে প্রশ্ন করে চাপে ফেলে আলোচনায় উঠে এসেছেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক সাভানাহ গুথ্রি।

বৃহস্পতিবারের ওই অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে কার্যত চেপে ধরেছিলেন সাভানাহ। ট্রাম্পের ঋণ, করোনা মোকাবেলায় নেয়া পদক্ষেপ এবং ডানপন্থী ষড়যন্ত্র নিয়ে একের পর এক প্রশ্নবাণ ছুড়ে মারেন তিনি।

স্পষ্টভাবেই তখন ট্রাম্পকে অস্বস্তিতে পড়তে দেখা যায়। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার ১ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবির থেকে সাভানাহকে আক্রমণ করে পোস্ট দেয়া হয়।

এতে দাবি করা হয়, তিনি জো বাইডেনের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করতে এসেছেন। গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ট্রাম্পের প্রচারণা শিবির থেকে সাভানাহর আক্রমণের মুখে পড়াই প্রমাণ করে অনুষ্ঠানটি তার জন্য কতবড় দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। দ্য গার্ডিয়ান।