নড়াইলে কলেজ শিক্ষক সাতক্ষীরায় আওয়ামীলীগ নেতা খুন
বিশেষ সংবাদদাতা, ঢাকা : নড়াইলের তুলারামপুর ইউনিয়নের বেনাহাটি গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক অরুণ কুমার রায়কে (৭২) গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
ঘটনাটি গতকাল শুক্রবার দিনের কোনো এক সময়ে ঘটে। নিহত কলেজ শিক্ষক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নিভা রাণী পাঠকের স্বামী।
এ বিষয়ে নিভা রাণী পাঠক জানান, করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধির পর থেকে তার স্বামী গ্রামের বাড়ি বেনাহাটিতে একাই থাকতেন। চাকরির সুবাদে তিনি খুলনায় থাকেন। তবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় ছেলে, বউমাসহ গ্রামের বাড়িতে আসেন তিনি। বাড়িতে এসে স্বামীকে অনেক ডাকাডাকির পরও ঘর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ছাদ দিয়ে ভেতরে ঢোকেন নিভা রাণীর ছেলে। ঘরে গিয়ে বাবার গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান তিনি।
নিভা রাণী পাঠক বলেন, ঘরে প্রবেশের মূল ফটক তালাবদ্ধ অবস্থায় পেয়েছি। দুর্বৃত্তরা কীভাবে ঘরে প্রবেশ করেছে, তা এই মুহূর্তে বোঝা যাচ্ছে না। তবে ছাদ দিয়ে ঘরে প্রবেশের জায়গা খোলা ছিল। এছাড়া ঘরের পেছনের একটি প্রবেশপথও খোলা দেখা গেছে। ঘর থেকে কোনো কিছু খোয়া গেছে কিনা, তা দেখা হচ্ছে।
নড়াইল সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন জানান, কখন কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে; তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায় ঘর থেকে তেমন কিছু খোয়া যাওয়ার আলামত পাওয়া যায়নি।
শনিবার দুপুর পর্যন্ত মামলা হয়নি এবং লাশের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
সাতক্ষীরায় : সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগ নেতা শরবত আলী হত্যা মামলার প্রধান আসামির ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। আজ শনিবার বেলা ১২টার সময় আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল শেষে শত শত নারী-পুরুষ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
এ সময় খাজরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল কুদ্দুস মোল্যার সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন প্রভাষক জাকিরুল ইসলাম, এ্যাডভোকেট প্রিন্স, ওহিদুল ইসলাম মোল্যা, নিহতের স্ত্রী শিফালী বেগম, ছেলে শিমুল, সবুজ, বিশিষ্ট সমাজসেবক বাবু রাম মন্ডল প্রমুখ। বক্তারা এসময় আওয়ামী লীগ নেতা শরবত হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমের ফাঁসি দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল গদাইপুর বিলে মঞ্জুরুল মোল্লার চিংড়ি ঘেরের দুই কর্মচারিকে বেঁধে রেখে মাছ লুটের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হন গদাইপুর গ্রামের মোজাহার সরদারের ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিম। পরবর্তীতে ডালিমের দুই ভাই ও তাদের বাহিনী ৯ এপ্রিল গদাইপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরবত মোল্লা মঞ্জুরুল মোল্লার চিংড়ি ঘেরে লুটপাট চালায়। ১০ এপ্রিল সকালে ওই মাছ গদাইপুরে বিক্রি করতে গেলে শরবত মোল্লার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতিও হয়। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান ডালিম তার ভাই টগরের নেতৃত্বে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শরবত মোল্লার বাড়ীত হামলা চালায়। শরবত মোল্লাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে শরবত আলী, তার স্ত্রী শরিফা খাতুনসহ ৫ থেকে ৬ রক্তাক্ত জখম হয়। ভাঙচুর করা হয় ৫টি বাড়ী। আহত শরবতকে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও পরে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় শরবতের ছেলে সবজু বাদী হয়ে ১১ এপ্রিল আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমকে প্রধান আসামি করে ৫৭ জনের নামে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর শাহানেওয়াজ ডালিম আত্মগোপন করেন। ২৮ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকা থেকে ডালিমকে গ্রেফতার করে।