বড়লেখায় সাইফুর হত্যার রহস্য উদঘাটন
সাপের কামড়ে নয়, শ্বাসরোধে পরিকল্পিত হত্যা
বড়লেখা প্রতিনিধি : বড়লেখায় গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে গিয়ে সিলেট পলিটেকনিক কলেজের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার সাইফুর রহমানের (২৭) মৃত্যুর রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।
শ্বাসরোধে হত্যার ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই সোমবার বিকেলে পুলিশ পরিকল্পিত হত্যায় জড়িত ৩ আসামীকে গ্রেফতার করেছে। এরা হচ্ছে উপজেলার বর্নি ইউনিয়নের আহমদপুর গ্রামের আনসার আলীর ছেলে কামাল আহমেদ সাজু (২২), জবলু হোসেন (২৫) ও বাবুল হোসেন (২৭)। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ আসামীদের আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে। আদালত আসামীদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলার আহমদপুর গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল আহাদ ছেলেসহ সিলেটে বসবাস করেন। সাইফুর রহমান (২৭) সিলেট পলিটেকনিক কলেজের মেধাবী ছাত্র ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে গত ৩০ জুলাই একাই তিনি বাড়িতে যান। রাতে শয়নকক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন সন্ধ্যায় পুলিশের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙ্গে ঘরের মেঝ থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় সাইফুর রহমানের চাচা বলাই মিয়াসহ এলাকার অনেকে জোর দিয়ে বলেন তাকে বিষাক্ত সাপ কামড় দিয়েছে। তার পায়ের উরুতে সাপের কামড়ের মতো কিছু চিহ্নও পাওয়া যায়। তারা তাকে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপরও তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকও তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর নিহত সাইফুর রহমানের লাশের ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়।
নিহত সাইফুর রহমানের ছোটভাই এমদাদুর রহমান জানান, ‘আমরা প্রথম থেকেই বলেছিলাম সাপের ছোবলে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়নি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর সাপের কামড়ে মৃত্যুর নাটক সাজানো হয়। তখন অজ্ঞাত আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দিতে গেলে পুলিশ বলেছিল ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার আলামত পাওয়া গেলে পুলিশ মামলা নিবে। শ্বাসরোধে হত্যার রিপোর্ট আসার পরই পুলিশ ডেকে নিয়ে মামলা নিয়েছে। হত্যায় জড়িত ৩ আসামীকে তাৎক্ষণিক পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অন্যান্য আসামীদের দ্রæত গ্রেফতার ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাচ্ছি।’
থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, নিহতের চাচা ও পাশের ঘরের বাসিন্দারা তখন বিষধর সাপের কামড়ে সাইফুর রহমানের মৃত্যু হয় বলে দাবী করেন। ময়না তদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় ছিলেন। সোমবার ময়না তদন্ত প্রতিবেদন হাতে আসে। এতে শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ মিলেছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই এমদাদুর রহমান থানায় হত্যা মামলা করেছেন। বিকেলেই অভিযান চালিয়ে ৩ আসামীকে গ্রেফতার করেন। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছেন। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।