এখন কী করবেন ট্রাম্প?
পোস্ট ডেস্ক : নির্বাচনপূর্ব জরিপের পূর্বাভাস সত্যি করে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্সি খুইয়েছেন।
পরাজয় নিশ্চিত জেনে গত শনিবার ভার্জিনিয়ায় নিজের গলফ ক্লাবে চলে যান তিনি। তবে কি গলফ খেলেই অবসর কাটাবেন ট্রাম্প?
ধনকুবের আবাসন ব্যবসায়ী ট্রাম্প যে চুপচাপ বসে থাকবেন না, সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। কিন্তু কী করবেন, সে ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা নেই বলে কৌতূহলী পর্যবেক্ষকদের অনুমান।
মামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন : পরাজয় মানবেন না, সেটা বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট করা হয়েছে ট্রাম্প ও তাঁর প্রচার শিবিরের পক্ষ থেকে। আদালতের দ্বারস্থ হবেন, সেই হুমকি তিনি দিয়েছেন নির্বাচনের আগেই। ফলে হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর তিনি নির্বাচনী ফল উল্টানোর লক্ষ্যে মামলা নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন কি না, তা নিয়ে রয়েছে জল্পনাকল্পনা।
আবার নির্বাচন করবেন : ২০২৪ সালে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন—এমন ধারণাও চাউর হয়েছে। হোয়াইট হাউসের সাবেক চিফ অব স্টাফ মিক মুলভানে এক আইরিশ বিশ্লেষক সংস্থাকে বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত প্রতীক্ষা নিয়ে বসে আছি, ট্রাম্প রাজনীতিতে থাকবেন এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে (প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের) সংক্ষিপ্ত তালিকায় আমি অবশ্যই তাঁর নাম রাখছি।’ ৭৪ বছর বয়সেও ট্রাম্প যে ভীষণ টগবগে, সেটা বলতে ভোলেননি মুলভানে।
নতুন টিভি চ্যানেল খুলবেন : আগাগোড়া ব্যবসায়ী ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ত্যাগ করতে বাধ্য হলে হয়তো নতুন টিভি চ্যানেল খুলে বসবেন। এমন অনুমানের পেছনে পর্যবেক্ষকদের যুক্তিও আছে। একসময়ের সফল টেলিভিশন তারকা ট্রাম্প সব সময় প্রচারমুখী। এ অবস্থায় নতুন টেলিভিশন চ্যানেল খুললে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ভ্রমণে বের হবেন : অতিকল্পনা হলেও স্ত্রীর হাত ধরে বেড়াতে বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না পর্যবেক্ষকরা। কারণ ট্রাম্প নিজেই একাধিকবার তেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত জুনে হোয়াইট হাউসে এক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘ফার্স্ট লেডিকে নিয়ে ট্রেইলার চালিয়ে আমি হয়তো নিউ ইয়র্কে ফিরব। হয়তো আমি একটা আরভি কিনব আর আমাদের ফার্স্ট লেডিকে নিয়ে ঘুরে বেড়াব।’
গত সপ্তাহে পেনসিলভানিয়ায় এক সমাবেশে বক্তৃতার মাঝখানে হঠাৎ ট্রাম্প দর্শকদের গাড়ির দিকে মনোযোগ দিয়ে বলে ওঠেন, ‘আপনাদের কী মনে হয়, আমি ওই গাড়িগুলোর একটায় লাফ দিয়ে চড়ে বসব আর দূরে চলে যাব? ও রকম করতে আমার ভালোই লাগবে, স্রেফ এই নরক থেকে বেরিয়ে যাওয়া।’
কিন্তু যাবেন কোথায় : ট্রাম্প হয়তো নিজের কোনো গলফ কোর্সে অথবা নিজের কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সময় কাটাবেন। গত শনিবার অবশ্য গলফ কোর্সেই গেছেন তিনি। তাঁর অবসরে যাওয়ার চিন্তাও একেবারে অমূলক নয়। ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে ‘দ্য ভিলেজেস’ শীর্ষক অবসরপ্রাপ্তদের এক এলাকায় সমাবেশে গিয়ে তিনি ঠাট্টাচ্ছলে বলেছেন, ‘আমি এখানে চলে আসব। আইডিয়াটা খারাপ না। আমার তো ভালোই মনে হচ্ছে।’ উদাস ভঙ্গিতে জর্জিয়ার এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেছেন, বাইডেন হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বাজে প্রার্থী’ এবং এ রকম লোকের কাছে হেরে গেলে তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাবেন।
নাকি কারারুদ্ধ হবেন : ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত করতে তাঁর ঘনিষ্ঠজনরা রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাত করেছিলেন, এমন এক গুরুতর অভিযোগ আপাতত ধামাচাপা পড়ে আছে স্রেফ তিনি প্রেসিডেন্ট বলে। হোয়াইট হাউসের কর্তৃত্ব খোয়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ওই অভিযোগের ছাইচাপা আগুন পুরোদমে যে জ্বলে উঠবে না, তা নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই।
এ ছাড়া যৌন হয়রানি, এমনকি ধর্ষণের অভিযোগও কম নেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। আরো আছে বিপুল কর ফাঁকিসহ নানা অর্থনৈতিক অনিয়মের অভিযোগ। সব অভিযোগ তাঁর প্রেসিডেন্সির কাছে আপাতত মাথানত করতে বাধ্য হলেও পরবর্তীকালে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে—এমন ধারণা পর্যবেক্ষকদের। সূত্র : এএফপি।