উনারা ‘জ্বীনের বাদশা’
বিশেষ সংবাদদাতা : নরসিংদীতে প্রতারক জ্বীনের বাদশা ও তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
সোমবার বিকেলে জেলার মনোহরদী উপজেলার বীরগাও এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ফারুক আহমেদ নামের এক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে জ্বীনের বাদশার মাধ্যমে জমি ও চাকরি দেওয়ার কথা বলে সাড়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মনোহরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, প্রতারক জ্বীনের বাদশা মনোহরদী উপজেলার বীরগাও এলাকার মৃত ইসমাইল মিয়ার ছেলে সোনাম উদ্দিন (৮০) ও তার সহযোগী সদর উপজেলার পশ্চিম দত্তপাড়া এলাকার আসাদ মিয়ার ছেলে সাদিকুর রহমান (৪৪)।
পুলিশ জানায়, বেলাব উপজেলার ফারুক মিয়া নামের একজনের জমিজমা নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরোধ ছিল। এ ঘটনায় তিনি গত ৩ অক্টোবর নরসিংদী শহরে আসেন। তারপর নরসিংদী সদরের দত্তপাড়া এলাকার সিএন্ডবি রোডে চায়ের দোকানে বসে চা পান করাকালে পাশে বসে থাকা আসামি প্রতারক সাদিকুর রহমান বলে উঠে, ‘১৪ বছর মামলা চালাইয়া জায়গার কোনো হদিস পাইলাম না, সেই মামলার কাগজ পাইলাম সোনাম উদ্দিন হুজুরের কাছে গিয়ে।’ তখন তার কথা বিশ্বাস করে এবং তার জমি নিয়া বিরোধের বিষয়ে প্রতারক সাদিকুর সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় প্রতারক একটা মোবাইল নম্বরে হুজুরের সঙ্গে কথা বলায় এবং হুজুর সরাসরি যেতে বলে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৪ অক্টোবর ভুক্তভোগী ফারুক আহমেদ প্রতারক সিদ্দিকের সঙ্গে মনোহরদীর বীরগাঁও এলাকায় প্রতারক জ্বীনের বাদশা সোনাম উদ্দিনের কাছে যায়। প্রতারক জ্বীনের বাদশা সোনাম উদ্দিন আলখাল্লা পোশাক পড়ে জ্বীন সেজে কণ্ঠ নকল করে কথা বলে এবং জনৈক ব্যক্তির মনে বিশ্বাস স্থাপন করায়।
জমি ও ভালো চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ধাপে ফারুক আহমেদেও কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর কাজ না হওয়ায় ফারুক আহমেদের সন্দেহ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার ফারুখ আহমেদ পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারকদের অবস্থান নিশ্চিত করে গতকাল সোমবার তাদেও গ্রেপ্তার করেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, আংটি, পাথর, আলখাল্লা পোশাক উদ্ধার করা হয়।
জেলা পুলিশের মিডিয়া সমন্বয়ক ও গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রুপণ কুমার সরকার বলেন, বেশ কিছুদিন যাবত পুলিশের নিকট অভিযোগ আসতেছিল যে, একটা সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র জ্বীনের বাদশা সেজে প্রতারণা করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ঘটনায় মনোহরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।