তহবিল গঠনের উদ্যোগ ট্রাম্পের
পোস্ট ডেস্ক : নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর রিপাবলিকান দলে নিজের গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখার জন্য একটি তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরাজয় স্বীকার না করে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ও আদালতে গেলেও সম্ভবত বাস্তবতা অনুধাবন করতে পারছেন তিনি।
নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর রিপাবলিকান দলে নিজের গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখার জন্য একটি তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরাজয় স্বীকার না করে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ও আদালতে গেলেও সম্ভবত বাস্তবতা অনুধাবন করতে পারছেন তিনি।
এ কারণে লিডারশিপ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি (পিএসি) নামে একটি ফেডারেল ফান্ড রাইসিং সংস্থা গঠন করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। এর কাজ হবে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করা এবং বিভিন্ন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের জন্য ব্যয় করা।
এদিকে বিভিন্ন সরকারি দফতরে যোগাযোগ ও ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের জন্য বাইডেন শিবিরকে সত্যায়ন দিতে গড়িমসি করছে ট্রাম্প প্রশাসন।
মার্কিন আইন অনুযায়ী, নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে কাজ করতে হলে জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন- জিএসএ থেকে জয়ী হওয়ার নিশ্চয়তা পত্র নিতে হয়। কিন্তু ট্রাম্পের হাতে নিয়োগ পাওয়া জিএসএ প্রশাসক এমিলি মারফি বলছেন, এখনও বাইডেনের বিজয় নিশ্চিত হয়নি। ফলে তিনি সত্যায়ন কাগজ দিচ্ছেন না।
নিউইয়র্ক টাইমস, এএফপি, এনপিআর ডটঅর্গ, স্ক্রল ডটইন।
অপেশাদার রাজনীতিক ও একরোখা হওয়ার কারণে ক্ষমতায় আসার আগ থেকেই বাইরে তো বটেই, খোদ রিপাবলিকান দলের অনেক শীর্ষ ও প্রভাবশালী নেতার অপছন্দের ব্যক্তিতে পরিণত হন ট্রাম্প। তারপর গত চার বছরে এই অপছন্দের সারি আরও দীর্ঘ হয়।
এবারের নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ট্রাম্পের হার আঁচ পেয়ে অনেক রিপাবলিকান জ্যেষ্ঠ নেতা প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা করেছেন। এমনকি তিনি পরাজয় মেনে না নেয়ায় তার হাতে নিয়োগ পাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাও সরে যাচ্ছেন ট্রাম্পের কাছ থেকে।
এ অবস্থায় ট্রাম্প বুঝতে পেরেছেন, আসলে তিনি যাই বলেন বা করেন শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাউস ছাড়তে হবে অতি দ্রুত। তাই দলে নিজের গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখতে পিএসি গঠন করতে যাচ্ছেন দ্বিতীয় মেয়াদে হেরে যাওয়া ট্রাম্প।
এ সপ্তাহেই পিএসি গঠনের ঘোষণা দেয়া হবে। এ ধরনের কমিটি বার্ষিক ডোনারপ্রতি পাঁচ হাজার ডলার চাঁদা নিতে পারবে। এই অঙ্ক অবশ্য ট্রাম্প ক্যাম্পেইনের গড়া কমিটির ও রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির নেয়া চাঁদার চেয়ে অনেক কম। তবে এই কমিটি অসংখ্য দাতার কাছ থেকে চাঁদা নিতে পারবে।
অন্যান্য পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটির কাছ থেকেও চাঁদা নেয়ার সুযোগ থাকবে এই কমিটির। এটি অন্য প্রার্থীদের সুবিধা দেয়ার নামে স্বাধীনভাবে অর্থ খরচ করতে পারবে। ট্রাম্প প্রচারণাশিবিরের মুখপাত্র টিম মুরটাউ বলেন, বিষয়টি নিয়ে কমিটি কাজ করছে।
তিনি জানান, জিতুন বা হারুন প্রেসিডেন্ট এমনটি করার চিন্তা করছিলেন। এতে করে বিভিন্ন প্রার্থীকে ও নিজে সমর্থন করেন এমন ইস্যুগুলোতে অর্থ খরচ করতে পারবেন ট্রাম্প। হেরে গেলেও বিপুল পরিমাণ ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প।
তার যে জনসমর্থন ও শ্বেতাঙ্গ উগ্রবাদীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা তাতে সহসাই ভাটা পড়বে না। তিনিও যে বিভিন্নভাবে এই সমর্থন ধরে রাখতে চান, তারই প্রমাণ লিডারশিপ পিএসি।
জয় ঠেকাতে টিকার ঘোষণায় দেরির দাবি ট্রাম্পের : তার জয় ঠেকাতে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এবং করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানি ফাইজার কোভিড-১৯ এর টিকার ঘোষণা দিতে দিরে করেছে বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘এফডিএ’র উচিত ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, মানুষের জীবনরক্ষায় দ্রুত টিকা উদ্ভাবনের ঘোষণা দেয়া।’ তিনি আরও দাবি করেন, তাকে ভ্যাকসিন বিজয়ী হিসেবে দেখতে না চাওয়ার কারণেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে টিকার ঘোষণা দেয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সেটি করা হয়নি।
ফাইজার ও জার্মানির কোম্পানি বায়োএনটেক সোমবার ঘোষণা দেয়, তাদের টিকা তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ৯০ শতাংশ সফল হয়েছে। এ ঘোষণার পর ট্রাম্প মন্তব্যটি করেন।
যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই চলার পথ খুঁজতে হবে ইইউকে : জো বাইডেনের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই চলার পথ খুঁজতে হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ)- এমন মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন নেতা ও বিশ্লেষকরা। তারা বলেন, বাইডেন জয়ী হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইইউ অংশীদারিত্ব সহযোগিতা আবারও পুরোদমে শুরু হবে।
কিন্তু ইউরোপীয়দের কোনো ধরনের বিভ্রম লালন করা ঠিক হবে না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক সেনা হবে না এবং ন্যাটোর বড় সুরক্ষাদাতাও সেভাবে হবে না। বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়ে ইইউ’র শীর্ষ কূটনীতিক জোসেফ ব্যারেল বলেন, এটি ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বড় দিন। আমরা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাব এবং নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক ঝালাই করে নেব।
তবে ইউরোপিয়ান কমিশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেন, রাতারাতি আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ওয়াশিংটনের নীতি পরিবর্তিত হবে না। বাইডেন চাইলেও সেটা পারবেন না।
কিছু ব্যবসার ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বাইডেন প্রশাসন : প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট বাইডেন নিজে সবুজ জ্বালানি ও উচ্চ মজুরির পক্ষে সবসময় সোচ্চার। এ কারণে তার বিজয়ের মধ্য দিয়ে কিছু ব্যবসার পোয়াবারো হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
নতুন প্রশাসন কতটুকু সংস্কার করতে পারবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হতে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে সবাইকে।