জো বাইডেন’র সিনিয়র এডভাইজার হলেন বাংলাদেশি ওসমান সিদ্দিক
পোস্ট ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের সমর্থনে দক্ষিণ এশিয়ানদের মোর্চা ‘সাউথ এশিয়ান্স ফর বাইডেন’র সিনিয়র এডভাইজার হয়েছেন বাংলাদেশি আমেরিকান ওসমান সিদ্দিক।
বাইডেনের রানিংমেট তথা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিস মনোনয়ন পাবার পরই মার্কিন রাজনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ানদের গুরুত্ব অবধারিত হয়ে উঠেছে। সে আলোকে বাইডেন-কমলাকে বিপুল বিজয় দিতে দক্ষিণ এশিয়ানরা পৃথক একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে কাজের সংকল্প গ্রহণ করেছে। এর আগে কখনোই এমনটি ঘটেনি।
ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, আফগানিস্তান, মালদ্বিপ এবং ভুটানের প্রায় ৮ মিলিয়ন অভিবাসী রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। এর সাথে যোগ হয়েছে এসব পরিবারে জন্মগ্রহণকারি আমেরিকানরা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইটি, চিকিৎসা, শিক্ষকতায় ভারতীয়রা দ্বিতীয় শীর্ষে অবস্থান করলেও বাংলাদেশিরাও পিছিয়ে নেই। এসব কারণে প্রশাসন এবং রাজনীতিতেও দক্ষিণ এশিয়ানদের এখন আর খাটো করে দেখার অবকাশ নেই বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সমাজবিজ্ঞানীরা।
তেমন একটি আমেজেই ‘সাউথ এশিয়ান্স ফর বাইডেন’র আবির্ভাব ঘটার সাথে সাথে ‘ইন্ডিয়ান্স ফর বাইডেন’, ‘বাংলাদেশি ফর বাইডেন’, ‘পাকিস্তানী ফর বাইডেন’, ‘শ্রীলংকানিয়ান ফর বাইডেন’ গঠিত হচ্ছে। অর্থাৎ সবকটি দেশের ফোরামের সমন্বয়ে জাতীয়ভিত্তিক ‘সাউথ এশিয়ান্স ফর বাইডেন’র কমিটি সম্প্রসারিত হবে। ‘বাইডেন-কমলা’ জুটির নির্বাচনী টিমের বিশেষ সহযোগী হিসেবে দক্ষিণ এশিয়াানদের এই মোর্চা তহবিল সংগ্রহের পাশাপাশি ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্তি এবং ভোট প্রদানে সকলকে উৎসাহিত করার সাংগঠনিক তৎপরতা চালাবে বলে জানা গেছে। আগে থেকেই যারা ডেমক্র্যাটিক পার্টির বিভিন্ন ফোরামে সক্রিয় ছিলেন তাদের সমন্বয়েই ‘বাইডেন-কমলা’র পক্ষে সকলে কাজ করবেন। ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের আগেই ডাকযোগেও ভোট দেয়া যাবে। এনিয়েও কাজ করবে ‘সাউথ এশিয়ান্স ফর বাইডেন’।
ওসমান সিদ্দিক উচ্চ শিক্ষার জন্যে ৭০ সালের আগে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। শিক্ষা শেষে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা শুরু করেন এবং সেই সূত্রে সিটিজেনশিপও পেয়েছেন। তারপরই মার্কিন রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন তাকে ফিজিসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেছিলেন। তারও আগে প্রেসিডেন্সিয়াল ডেলিগেশন হিসেবে মার্কিন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন কিশোরগঞ্জের সম্ভ্রান্ত একটি পরিবারের সন্তান ওসমান সিদ্দিক। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ন্যাশনাল ডেমক্র্যাটিক ইন্সটিটিউটের ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক’ হিসেবেও একবার দায়িত্ব পালন করেন। শুধু তাই নয়, প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন ঢাকা সফরের সময়েও সাথে ছিলেন ওসমান সিদ্দিক।
বহুজাতিক এ সমাজে প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ে অতি পরিচিত ওসমান সিদ্দিকের মাধ্যমেই প্রবাসী বাংলাদেশী এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকানরাও ধীরে ধীরে সামনে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে অনুপ্রাণীত হচ্ছেন। মৃদুভাষী ওসমান সিদ্দিক সকল প্রবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছেন ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে ভোট দিতে কেউ যেন গড়িমসি না করেন। কারণ এবারের নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। অভিবাসীদের অস্তিত্বের স্বার্থে এবং মর্যাদার প্রশ্নে আসন্ন নির্বাচনে বাইডেন-কমলার বিজয়ের বিকল্প নেই’-বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে এ মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম মুসলমান রাষ্ট্রদূত ওসমান সিদ্দিক।
উল্লেখ্য যে, ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমক্র্যাটিক পার্টি থেকে বাংলাদেশি আমেরিকান ড. নিনা আহমেদ পেনসিলভেনিয়া স্টেট অডিটর জিনারেল এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান ডোনা ইমাম টেক্সাসের কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৩১ এর মনোনয়ন পেয়েছেন। উভয়েরই জয়ের সম্ভাবনা প্রবল বলে জানা গেছে। তবে এ দুজনের জনেও নির্বাচনী তহবিল জোরদার করা জরুরী হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই বিচ্ছিন্ন কিছু উদ্যোগ পরিলক্ষিত হলেও যতটা জোরালো হওয়া দরকার তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি বাংলাদেশি আমেরিকানরা-এ অভিমত রয়েছে সুধীজনে।