বাহুবলে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা : হবিগঞ্জের বাহুবলে সৌদিপ্রবাসীর স্ত্রী তানিয়া আক্তার (২২) কে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ২ নম্বর আসামি ও তানিয়ার শ্বশুর হারুনুর রশীদকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান র্যাব।
বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তাকে উপজেলার ভুগলী গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বুধবার রাতে দেবর জানে আলমকে প্রধান আসামি করে শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন নিহত তানিয়ার মা রুনা আক্তার।
র্যাব শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের এসআই মনির গ্রেপ্তারে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার শ্বশুরবাড়ি বাহুবল উপজেলার ভূগলী গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাহুবল উপজেলার মির্জাটুলা গ্রামের সৌদিপ্রবাসী নুরুল ইসলামের মেয়ে তানিয়া আক্তার (২২) এর সাথে তিন বছর পূর্বে বিয়ে হয় একই উপজেলার ফদ্রখলা গ্রামের সৌদিপ্রবাসী শাহ আলমের সাথে। তাদের ২২ মাসের একটি পুত্র সন্তান আছে। সুখেই যাচ্ছিল তানিয়ার দাম্পত্য জীবন। কিন্তু রূপবতী তানিয়ার প্রতি কুনজর পড়ে দুই সন্তানের পিতা দেবর জানে আলমের। তানিয়াকে প্রায়ই সে উত্ত্যক্ত করত। তানিয়া শ্বশুর-শাশুড়িকে বিষয়টি বার বার জানালেও তারা কর্ণপাত করেনি।
জানে আলমের স্ত্রী ঝুমা আক্তারকেও বিষয়টি জানায় তানিয়া। এ নিয়ে জানে আলমের সাথে তার স্ত্রী ঝুমা আক্তারের ঝগড়াও হয়। স্ত্রীর নিষেধ মানেনি জানে আলম। একপর্যায়ে জানে আলমের ঘর ছাড়ে স্ত্রী ঝুমা আক্তার। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে পুরো গ্রামে।
ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে জানে আলম। বিচার দেওয়ার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া ওঠে সে। রবিবার দিবাগত রাতে দরজার তালা ভেঙে তানিয়ার রুমে প্রবেশ করে তানিয়াকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে জানে আলম। একপর্যায়ে তানিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মুখে বিষ ঢেলে দেয়। ওই দিন রাতে তানিয়ার ছোট ভাই তানভীরকে ফোন দেয় জানে আলম। ফোন দিয়ে বলে, তার স্ত্রী অসুস্থ। একটি সিএনজি নিয়ে আসতে। সে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে জানে আলমের বাড়িতে গিয়ে দেখে তার স্ত্রী নয় তানভীরের বোন অসুস্থ অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। পরে তাকে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে সিলেট ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা। সোমবার সকালে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তানিয়ার মৃত্যু হয়।
বাহুবল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান মামলা দায়েরের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে গ্রেপ্তারকৃত আসামি ও তানিয়ার শ্বশুর হারুনুর রশীদকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত হস্তান্তর করেনি বলে জানান তিনি।