জুয়ার টাকা জোগাতে মা-বোনকে খুন!
পোস্ট ডেস্ক : বয়স মাত্র ২৩। পড়াশোনা করছেন প্রকৌশলবিদ্যায়।
যে সময়ে তার পড়াশোনা আর খেলাধুলা নিয়ে মগ্ন থাকার কথা, তখন সে জড়িয়ে পড়ে জুয়ার নেশায়। এই জুয়া তাসের নয়, ক্রিকেটের! বিভিন্ন ক্রিকেট ম্যাচের ওপর বাজি ধরতে গিয়ে একসময় নেশায় পরিণত হয়। বাজি ধরতে ধরতে মায়ের ব্যাংকে রাখা সব অর্থ তুলে এনেও শান্তি পাননি। নিজেদের সব সম্পত্তি বিক্রি করা শুরু করেন।শেষ পর্যন্ত সেই জুয়াড়ির হাতে খুন হয় তার মা এবং বোন!
ভারতের হায়দরাবাদে এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে। সেই জুয়াড়ি হলেন এমটেকের ছাত্র পাল্লি সৈনত রেড্ডি। মেদচল অঞ্চলের থানার পুলিশ এ ঘটনা নিশ্চিত করেছে। মুম্বাই মিরর জানিয়েছে, দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া এই ছাত্র ক্রিকেট নিয়ে বাজির নেশায় পড়েছিলেন। তার বাবা প্রভাকর রেড্ডি তিন বছর আগেই মারা গেছেন। মা সুনিতা (৪৪) একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। বোন অনুজা (২২) ফার্মাসিতে পড়াশোনা করছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর জীবনবিমা থেকে প্রাপ্ত অর্থের সঙ্গে নিজেদের কিছু সম্পত্তি বিক্রির টাকা ব্যাংকে রেখেছিলেন সুনিতা।
এই টাকাই কাল হয়ে দাঁড়ায় সুনিতা আর অনুজার জন্য। ছেলে পাল্লি সৈনত বাজির নেশায় মাকে না জানিয়েই পুরো ২০ লাখ রুপি তুলে নিয়ে আসেন এবং পুরোটাই হেরে যান। বাজির অঙ্ক শোধ করতে মায়ের ১৫ তোলা গয়নাও বিক্রি করে দেন। সুনিতা ও অনুজা পরে এ ঘটনা জানতে পেরে পাল্লি সৈনতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সুনিতা ছেলেকে শাসন করেন এবং জুয়ার নেশা ছেড়ে দেওয়ার জন্য কঠোর নির্দেশ দেন। এরপরেই মা-বোনকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় সৈনত।
মেদচল পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৩ নভেম্বর সৈনত কীটনাশক কিনে এনে তার মা ও বোনের রাতের খাবারে মিশিয়ে দেন। খণ্ডকালীন চাকরি করা সৈনত রাতের খাবার নিয়ে অফিসে চলে যান। বারবার সৈনতকে ফোন করছিলেন সুনিতা, কিন্তু আগে থেকে মোবাইল বন্ধ করে রেখেছিলেন সৈনত। সকাল ৯টায় ফোন চালু করে মায়ের মেসেজ দেখেন। তারপর ঘরে ফিরে দেখেন মা-বোন বিষের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। তাদের এই যন্ত্রণার দৃশ্য বসে বসে দেখেন সৈনত।
তখনও হাসপাতালে নিলে সৈনতের মা-বোন হয়তোবা বেঁচে যেতেন। কিন্তু পাষণ্ড ছেলে মা-বোনের অজ্ঞান হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত জেনে তাদের হাসপাতালে নেওয়ার নাটক সাজান। এত দেরি করে হাসপাতালে নেওয়ায় চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেও মা-মেয়েকে বাঁচাতে পারেননি। গত ২৭ নভেম্বর অনুজা মারা যান; পরদিন মারা যান সুনিতা। এ ঘটনায় আত্মীয়রা সৈনতকে সন্দেহের বশে জেরা শুরু করলে সৈনত নিজের দোষ স্বীকার করেন। এরপর তাকে হত্যা এবং প্রমাণ লোপাটের দায়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।