উধাও রোকসানা বেগম লিমা!

Published: 5 December 2020

সিলেট অফিস : বিয়ানীবাজারে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত ২ বারের উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) রোকসানা বেগম লিমা উধাও হয়ে গেছেন। তাকে কোথাও খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেন তিনি হঠাৎ সবাইকে রেখে আড়াল হলেন এ নিয়ে চলছে কানাঘুষা।

গত কয়েক মাস থেকে লিমাকে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। রাজনৈতিক মাঠ থেকে হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাওয়ায় তার অনুসারিরা অনেকটা হতাশ। তাকে এই করোনাকালীন সময়ে আর মাঠে দেখা যাচ্ছে না। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলসহ সর্ব মহলে শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনা। জনগণের কাছে অতি জনপ্রিয় এই লিমাকে কৌশলে রাজণীতির মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে নাকি তিনি মনের ক্ষোভে মাঠে আসছেন না এ নিয়েও রয়েছে নানা জনের নানা মত। তবে সচেতন মহলের মতে, আওয়ামীলীগ ঘরানার এই নারী ভাইস চেয়ারম্যানকে কৌশলে মাঠ ছাড়া করলে দলের অনেক ক্ষতি হতে পারে। কারণ ভোটের রাজনীতিতে তিনিই দুইবার প্রমাণ করেছেন, জনগণের কাছে তিনি কতটা জনপ্রিয়।
সূত্রমতে, ২০১৩ সালে এমসি কলেজের ছাত্রী থাকা অবস্থায় বিয়ানীবাজারের গ্রামের মেয়ে রোকসানা বেগম লিমা রাজনীতির মাঠে নামেন। হঠাৎ করেই তিনি ঘোষণা দেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করার। জনগণ ও লিমাকে লুফে নেন। ওই নির্বাচনে সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুমা চক্রবর্তী ও শহীদ কন্যা স্বাধীন সুন্দরীকে পরাজিত করে সর্ব্বোচ্চ ভোটে অর্থাৎ প্রায় ৩৪ হাজার ভোটে নির্বাচিত হন। এরপর থেকে লিমাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। জনগণের দ্বারে দ্বারে ছুটতে থাকেন তিনি। জনগণকে সাধ্যমতো সহযোগিতাও করেন।
উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, রোকসানা বেগম লিমা দূর্নীতির ধারে কাছে ও যেতেন না। তাই তাকে নিয়ে ছিলেন দূর্ণীতিবাজরা আতংকিত। যোগদানের পর থেকে লিমা দূর্নীতির প্রতিবাদ করায় অনেকের চক্ষুশুল হয়ে পড়েন। তারপরও তিনি থেমে থাকেন নি। তিনি বিয়ানীবাজারের কতিপয় দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপর মহলে অভিযোগ করেও আলোচনায় আসেন। এ নিয়ে দলীয় রাজনীতিতেও ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে বিরুপ মন্তব্য প্রকাশ্যেও চলতো। তাতে তিনি পাত্তা না দিয়েও তার স্বীয় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।


২০১৮ইং সনে পুনরায় নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা করা হলে তিনি একই পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামেন। গত নির্বাচনের চেয়ে অধিক পরিমান ভোট পেয়ে অর্থাৎ ৩৮ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়ে তিনি নির্বাচিত হন। সূত্র মতে, রোকসানা কেগম লিমা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আবারো তাকে নিয়ে শুরু হয় নানা ধরণের ষড়যন্ত্র। তাকে দুরে ঠেলে রাখতে অবলম্বন করা হচ্ছে নানা কৌশল। এই কৌশলে তাকে সরকারী উন্নয়ন কর্মসূচী থেকে দুরে রাখা হচ্ছে। সুযোগ দেয়া হচ্ছে না উন্নয়নের ভাগিদার হওয়ার।
এ প্রসঙ্গে জানতে, বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রোকসানা বেগম লিমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জনগণ আমার সাথে রয়েছেন। জনগণই আমার বল ও হাতিয়ার। সরকার দলের হয়েও দূর্ণীতিতে সহযোগিতা না করায় আমাকে অনেকটা কোনঠাসা করা হয়েছে এটা আমি অস্বীকার করবো না।
ওই জনপ্রিয় নেত্রীর মতে, তিনি প্রশাসনের অন্তরালে থাকলে জনগণের সামনে আছেন। জনগণকে নিয়ে তার সকল কর্মকাণ্ড বলে তিনি জানান।