নবীগঞ্জে অসুস্থ নানা নানীকে শেষ দেখা হলোনা শিশু মারিয়ার

Published: 9 December 2020

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: ঢাকা সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের ফুলতলী বাজারস্থ শাহ মুশকিল আহসান (র.) মাজারের নিকটে গত সোমবার বাস ও দুইটি সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে ৮ জনের মৃত্যু হয়।

এই মৃত্যর মিছিলে ছিলেন একই পরিবারের ৩জন। তারা হলেন নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের মুড়াউরা গ্রামের আবু তাহের স্ত্রী ছমিরুন বেগম(২৮), মেয়ে মারিয়া আক্তার (২), আবু তাহেরের ভাই আনু মিয়ার নববিবাহিতা স্ত্রী হালিমা বেগম (২৫)।

মৃত হালিমা বেগমের স্বামী অনু মিয়া জানান,তার ভাবী ছমিরুন বেগম নিজের শিশু কন্যা মারিয়া ও তার নববিবাহিত স্ত্রী হালিমাকে নিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার মুড়াউড়া গ্রাম থেকে অসুস্থ্য মা বাবাকে দেখতে একটি সিএনজি (অটোরিক্সা) নিয়ে পানিউমদা গ্রামে বাবার বাড়ীতে যাচ্ছিলেন।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনারা খবর পেয়ে তিনি ঘটনস্থলে আসেন । এ সময় শত শত লোককে ডিঙ্গিয়ে তিনি গাড়ীর নীচে চলে যান। পরে আইনশৃংখলা বাহিনীর লোকজন তাকে সরিয়ে নিয়ে আসে। এ সময় অনু মিয়া চিৎকার করে কাদছিলেন। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন যাবার সময় আমার ভাতিজী মারিয়া বলেছিল চাচ্চু যাচ্ছি। এই যাওয়াই হলো তার শেষ যাওয়া। এই বলেই তিনি বিলাপ করতে থাকেন।

নিহত ছমিরুনের স্বামী আবু তাহের জানান,আমার মেয়ে মারিয়া বায়না ধরে ছিল তার অসুস্থ্য নানা নানীকে দেখতে। সেই বায়না মিটাতেই ছমিরুন একটি সিএনজি নিয়ে বাবার বাড়ী রওয়ানা হয়। যাবার সময় ছমিরুন তাকে বলে যান রান্না করে রেখেছি। খেয়ে নিও।

সেই রান্না করা ভাত খাওয়ার আগেই দুর্ঘটনার খবর আসে। ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখি স্ত্রী মেয়ে ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর লাশ। স্ত্রীর হাতের রান্না করা ভাত আর খাওয়া হয়নি। আমার মেয়েরও তার নানা নানীকে দেখা হলোনা।

তিনি জানান তার ছোট ভাই অনু দুই মাস আগে হালিমাকে বিয়ে করেছে। আমাদের সংসার এখন অন্ধকার। এ সময় ছোট ফুটফুটে শিশু মারিয়ার জন্য বাপ চাচা হাউমাউ করে কাঁদছিলেন।

তাদের কান্নায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি উপস্থিত গ্রামবাসীও। এ সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়।